• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

সাতক্ষীরায় ভেঙে যাওয়া সড়কে চলাচল বন্ধ, চার বছরে হয়নি সংস্কার


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৪৩ পিএম
সাতক্ষীরায় ভেঙে যাওয়া সড়কে চলাচল বন্ধ
চার বছরে হয়নি সংস্কার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কুড়িকাহুনিয়া অভিমুখে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) অধিদপ্তরের প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কটি দিয়ে ৪ বছর ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে কপোতাক্ষ নদের বাঁধ ভেঙে  স্রোতের তোড়ে সড়কটি ভেঙে যায়। তখন থেকে এর মাঝ দিয়ে একটি খাল তৈরি হয়। এরপর সড়কটি আর মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ ইউনিয়নের গোকুলনগর, নাকনা, গোয়ালকাটি, সোনাতনকাটি, শ্রীপুর, কুড়িকাহুনিয়া সহ পার্শ্ববর্তী কয়রা উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সড়কপথের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কুড়িকাহুনিয়া পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কটির মধ্যখানে ভেঙে খাল সৃষ্টি হওয়ার কারণে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। সড়কের ভাঙা ওই স্থানে থই থই করছে পানি। যে কারণে ১০ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভিটেমাটি হারানো কালাম গাজী বলেন, অনেক কষ্টে একটা পাঁকা ঘর তৈরি করে ছিলাম। কিন্তু  সেই ঘরে একমাস ও বাস করতে পারেনি। আমার ঘরসহ এই জায়গায় ২২-২৩টা ঘর, জায়গা জমি সব খালের সাথে মিশে গেছে। এখনও যদি এই রাস্তাটা হতো তাহলে আস্তে আস্তে মাটি ভরাট করে আমার বাপ দাদার ভিটেতে থাকতে পারতাম।

একই এলাকার মহিনূর গাজী বলেন, এইখানে আমার একমাত্র উপার্জন করার একটা ধানমাড়ায়ের মিল ছিল। যার অর্থ দিয়ে আমার সংসার চলত। সেই মিলটা ও এই খালে চলে গেছে। নদী ভরাট করে ওবদার রাস্তা হচ্ছে কিন্তু আমাদের এই সামান্য রাস্তা বানানোর জন্য আজ পর্যন্ত কেউ কোন ব্যবস্থা নিল না। কবে হবে কেউ বলতে পারে না, কোন আশায় আমরা বাস করব এই জায়গায়।

নাকনা গ্রামের বৃদ্ধ কৃষক ভবেন সরকার বলেন, এই এলাকার আমরা বহু কৃষক প্রতিদিন অনেক ধরনের কৃষিপণ্য, শাক-সবজি নিয়ে তালতলার হাটে নিয়ে বিক্রি করতাম। রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় এসব পণ্য হাটে নিতে কৃষকদের খুব কষ্ট হয়। এখন আর সবাই যেতে পারে না। নৌকায় উঠলে ১০-২০টাকা খরচ। আমরা দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাই।

কুড়িকাহুনিয়া সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী ব্যবসায়ী সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আগে ভ্যানে মালামাল নিতাম। এখন মাথায় করে, নৌকায় মালামাল টানতে হয়। ভ্যান বা অন্য গাড়ি এই পথে চলার উপায় নেই। কয়েক বছর ধরে খুব কষ্টে মধ্যে আমরা ব্যবসা করছি।

প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. রুহুল হক স্যারের প্রচেষ্টায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আগে ফুলতলা বাজার থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে গোয়ালকাটি পর্যন্দ ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার কার্পেটিং রাস্তার বরাদ্দ এনে ছিলাম। রাস্তাটি নির্মাণ করার জন্য ঠিকাদার ও নিয়োগ ছিলো। ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য কাজ শুরু করা যায়নি। ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াসের ফলে এই রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় কাজ করার আর পরিবেশ হয়নি। বর্তমান চেয়ারম্যান ও এখনো পর্যন্ত রাস্তাটির পুনরায় বরাদ্দ করাতে পারেনি। কোন বিকল্প ব্যবস্থা ও করতে না পারায় এই ইউনিয়নের হাজার হাজার জনগণ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ে। রাস্তাটি সংস্কার করা খুব জরুরি।

প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালীর কাছে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গড়ইমহল খালের সাথে রাস্তাটি বিলীন হয়ে গেছে। বড় বরাদ্দ ছাড়া এই রাস্তা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি এমপি মহোদয়সহ উদ্বর্তন কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানায় যাতে এই রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাজিমুল হক জানান, দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার ফলে রাস্তাটির আগের প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে দৃশ্যমান কোন রাস্তা না থাকায় পরবর্তীতে নতুন করে আর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে সেখানে কোন প্রকল্পের সহযোগিতায় যদি রাস্তা সংস্কার হয়, তাহলে আমাদের অফিস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহাগ খান এর কাছে রাস্তাটির সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য এখনো পর্যন্ত প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা কোন আবেদন পায়নি। যদি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাওয়া হয় তাহলে আমরা অফিসিয়ালি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রণ করতে পারব।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image