• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বাদাম বিক্রি করে চলে শাহিদুলের সংসার ও পড়ালেখা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ আগষ্ট, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:০৯ পিএম
বাদাম বিক্রি করে চলে সংসার ও পড়ালেখা
শাহিদুল

জলঢাকা, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ ফুটফুটে একটি শিশু একটি স্কুলের হাট বাজার  মাঝে ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করছে। দূর থেকে দৃশ্যটি দেখে একটু এগিয়ে এসে বাদাম ওয়ালা বলে ডাকতেই কাছে এসে বলল বাদাম নেবের স্যার। নাম জিজ্ঞাসা করতেই বলে উঠে আমার শহিদুল ইসলাম । আমি ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী আশ্রয়ন  গ্রামে মা,বাবার  সাথে বাড়ীতে থাকি।

এ এক শিশু বাদাম বিক্রেতার গল্প। ওর নাম শহিদুল । বয়স ১২ বছর। বাড়ী নীলফামারীর  ডিমলা  উপজেলার ঝুনাগাছচাপানী  ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী  গ্রামে।শাহিদুলের পিতার মো. ইয়াকুব আলী , মায়ের নাম শোকজান বেগম। শাহিদুলরা তিন ভাই দুই বোন।বড় ভাই বিয়ে করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আলদা বসবাস করে।এক বোনের বিয়ে হয়েছে। দুই ভাই, এক বোন ও মা, বাবা সহ একসাথে বসবাস করেন।  শহিদুল  (১২) সে ডিমলা উপজেলার  উপজেলার ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়নের সৈকত উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়া লেখা করে।

বাবা মোঃইয়াকুব আলী দিন মজুরের কাজ করে  অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।মা,বাবা,ভাই, বোন সহ নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করতে হয়। তাই যে বয়সে তার স্কুলের ব্যাগ কাধে নিয়ে স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করার কথা, বন্ধুর সাথে খেলাধোলা করার কথা সেই বয়সে সে কাধে তুলে নিয়েছে বাদাম বিক্রির ঝুড়ি। শহিদুল  এ প্রতিনিধিকে জানান, আগে আমরা পূর্ব ছাতুনামা এলাকায় বসবাস করতাম।তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে বসত-ভিটা সহ জমি জায়গা তিস্তা নদীতে বিলিত হলে আমরা উত্তর সোনাখুলী আশ্রয়ন সংলগ্ন বসবাস করি।এখানে এসে  বড় ভাই  বিয়ে করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আলেদা বসবাস করে। বাবা দিনমজুরের কাজ করে যে টাকা আয় করে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়।আমার পড়ালেখার খরচ কি ভাবে যোগাবে। তাই পড়াশুনার পাশাপাশি পড়ালেখার খরচ ও বাবাকে সহযোগীতা করার জন্য বাদাম বিক্রি করি।প্রতিদিন  স্কুল ছুটির পরে খাওয়া করে ৫টার থেকে রাত ৮/৯টা পযর্ন্ত  হাট বাজারে বাদাম বিক্রি করি। দৈনিক কত হয় জিজ্ঞাসা করতেই উত্তর প্রতিদিন বাদাম বিক্রি করে ২৫০ টাকা থেকে ৫‘শ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। তাহা বাবাকে দেই এ দিয়েই আমার পড়ালেখার খরচ ও  ভালোভাবে সংসার চলছে ! সংসারের সহযোগিতার  দ্বায়িত্ব নিয়ে লেখা পড়া করব কিভাবে ? খরচই বা কে চালাবে। বাদাম বিক্রি করে পড়ালেখা করতে কষ্ট হয়। আমার অনেক বড় ইচ্ছে লেখাপড়া করে অনেক বড় মানুষ হব।বাবা ও মাকে সুখে রাখবো।কে আমাকে লেখাপড়ার খরচ দেবে বলে জানায়।যখন তার থাকার কথা ছিল স্কুলে পড়ালেখায় ব্যস্ত। কিন্তু অভাব আর অসহায় তাকে বাদাম বিক্রি করে বাবা ও মাকে নিয়ে সংসারে দ্বায়িত্ব নিতে হয়েছে শিশু শহিদুল(১২)কে। স্থানীয় মজিবর রহমান জানান পূর্ব ছাতুনামায় যখন তারা বসবাস করত,তখন তাদের অবস্থা ভালো ছিলো। তিস্তা নদীতে জায়গা জমি বিলিন হওয়ায় তারা নিঃস্ব হয়ে যায়। বর্তমানে তারা আশ্রয়নের সংলগ্ন বসবাস করে খুব কষ্ট করে দিন যাপন কর। 

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৪টায়  ঝুনাগাছচাপানী বাজারে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে কাঁধে ঝুড়ি ঝুলিয়ে খুব খুশি মনে বাদাম বিক্রি করছে হাস্যেজ্জল শিশু শহিদুল  তখন কথা হচ্ছিল তার সাথে। এভাবেই শাহিদুলের মত শিশুদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। ওদের স্বপ্ন পুরন করতে হাত বাড়ায় না কোন মহামানব।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image