• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

পানছড়িতে সংখ্যালঘু পরিবারের বাগানে আগুন 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:১৭ পিএম
পানছড়িতে সংখ্যালঘু পরিবারের
বাগানে আগুন 

রিপন সরকার, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ৫ নং উল্টাছড়ি ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামে দীর্ঘদিন পর্যন্ত বাগবাগিচা ও ঘরবাড়ি করে বসবাসরত একটি সনাতন (হিন্দু) সংখ্যা লঘু পরিবারের আম ও সেগুন গাছের বাগান পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বিত্তরা। এতে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ঘটনার দীর্ঘ ১৮ দিন পরও রহস্য জানা যায়নি। 

জানা গেছে, ২০০০ সালে ওমরপুর নতুন ভাবে বাড়িঘর করে বসবাস ও বাগ বগিচা  সৃজন করা শুরু করেন অগ্নি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি প্রথমে ০২৩ শতক (একর) জায়গায় আম বাগান, পরে লিচু, মাল্টা, এবং সেগুন গাছের বাগান করেন, বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ একর জায়গায় এসকল বাগান রয়েছে। গত তিন বছর আগে একটু বাড়তি টাকা আয় করার জন্য বাগান মালিক লিটন সরকার উদ্যোগ নেন সেগুন গাছের স্ট্যাম্প( চারা) করার, সংগ্রহ করতে থাকেন বীজ ১৫ মন সেগুন বীজের চারা উৎপন্ন করেন, কিন্তু যখন স্ট্যাম্প (চারা) বিক্রি করার সময় এসেছে ঠিক সে-সময় কে বা কারা বাগানে আগুন লাগিয়ে দিয়ে সেগুন চারা, আম বাগান, এবং পুরো বাগান পুড়িয়ে দিয়েছে, এতে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তবে ভয় ভিতি আতংক আর আত্মসম্মাননের ভয়ে আইনের আশ্রয় ও নেননি তারা, কারন আত্ম মনবতা, মানব সেবাসহ অনেক সেবামুলক কাজ থেকে জনপ্রতিনিধিত্ব ও করেছে এই পরিবারের অভিভাবকরা, দীর্ঘ বছরে হয়ত কোনদিন গ্রামের কারো কাছে  কোন বিষয়ে হেয় প্রতিপন্ন হয়নি তাই ঐ এলাকার মানুষের ভালোবাসা, আন্তরিকতা আর মায়া ভুলে কখনো এলাকাও ছাড়তে চাননা তারা, এলাকা বাসির ভালোবাসা আর মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য  অব শেষে নতুন করে একটি সেমিপাকা ঘরও করেছেন  সেখানে, কিন্তু দুর্ভাগ্য  গত ১৩  মার্চ ২০২৩ ইং সোমবার একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাড়ির সবাই পানছড়ি মন্দিরে আসায় কে বা কারা একটি আমবাগান ও সেগুন গাছের বাগানে আগুন লাগিয়ে পুড়ে দিয়েছে, এতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এ জীবনে আর পুষিয়ে উঠা সম্ভব নয় এমন মন্তব্য করলেন  পানছড়ি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেয়াসহ বিভিন্ন ভাবে ধার কর্জ করে সৃজন করা বাগান মালিক সাবেক উল্টাছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি  ডা বিজয় চন্দ্র সরকার, সাবেক মহিলা সংরক্ষিত আসনের নির্বাচিত জন প্রতিনিধি ও সমাজ সেবিকা মায়া রানী সরকার ও  লিটন সরকার।  বিষয়টি এলাকার জন প্রতিনিধি সহ সবাইকে জানালেও এখনো পর্যন্ত কোন রহস্য বের হয়নি। এ আগুনে প্রায় অর্ধ লক্ষাধীক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও বর্তমানে  আতংকেও রয়েছে পরিবারটি আবার কখন কি ঘটে এমন মন্তব্য করলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন। তবে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন আইনের আশ্রয় নেননি পরিবারটি।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার প্রধান ডা বিজয় চন্দ্র সরকার বলেন কার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিব আমিতো কাউকে দেখিনি কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে, আমারতো কোন শত্রু নেই, আমি সবাইকে আমার পরিবারের মানুষ মনে করি, সাম্প্রদায়িক কোন বেদাবেদ নেই আমাদের মাঝে, সবাই আমাদেরকে যেমন ভালোবাসে আমরাও সবাইকে তেমনই ভালোবাসি। দীর্ঘ বছর যাবত এ গ্রামে হাজার হাজার মুসলিমদের মধ্যে আমাদের একটি সনাতন (হিন্দু) পরিবার একে অপরে ভাই ভাই হিসেবে বসবাস করে আসছি কিন্তু কোনদিনও আমাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি  হয়নি কিন্তু ঐ দিন কিভাবে আমাদের এতো কষ্টের এতো স্বপ্নের বাগানটি কে বা কারা পুড়ে দিয়েছে জানিনা তবে আমি আইনের আশ্রয় নিলে কতোটা বিচার পাব জানিনা কারন একদিকে আমি সংখ্যা লঘু আর অন্যদিকে আমার পুড়ে যাওয়া বাগান ছাড়া অন্য কোন সাক্ষী নাই, তাই আমার মহান স্রষ্ট্রা ছাড়া কাউকে বিচার দেয়ারমতো নাই। তারা আরো বলেন বাগান পুড়ার দীর্ঘ ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত কোর রহস্য উদঘাটন হয়নি বিষয়টি দুঃখজনক। 

ওয়াড মেম্বার মোঃ নিজাম উদ্দিন বাগান পোড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছি কারা এঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে খুজে বের করে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। 

উল্টাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আহির উদ্দিন বলেন অপরাধী যেই হোক তাকে খুজে বের করে অবশ্যই আইনি ব্যাবস্থা নেয়া হবে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image