নিউজ ডেস্ক : কিছুক্ষণের মধ্যে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। উন্নত সেবার মধ্য দিয়ে তিনগুণ আয় করতে চায় সিভিল এভিয়েশন। আর অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বমানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ করবে নতুন মাত্রা।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর সক্ষমতার টেকসই অবস্থার জানান দিচ্ছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সরকারের দেড় দশকের টানা উন্নয়নের রথযাত্রার প্রতিচ্ছবি হিসেবে দৃশ্যমান হলো বিমানবন্দরটির তৃতীয় টার্মিনাল।
আধুনিক সরঞ্জাম, স্বয়ংক্রিয় সেবা ও চোখ আটকে থাকা নকশা এরইমধ্যে আকৃষ্ট করেছে বিশ্বের নামি দামি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে। লক্ষ্য পূরণে বাড়বে যাত্রী সংখ্যাও। উন্নত সেবার বিপরীতে কয়েকগুণ আয় বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে সিভিল এভিয়েশন।
চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, অনেক দেশের সঙ্গে আমাদের আকাশ যোগাযোগ ছিল না। এ টার্মিনালের ফলে নতুন করে ব্যবস্থাপনা হবে। বিনিয়োগকারী বা উন্নয়ন অংশীজনরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। বিপুল সংখ্যক যাত্রী আসা-যাওয়া করবেন। এতে অর্থনীতিতে দারুণ লাভের সম্ভাবনা আছে।
নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা আস্থার যোগান দেবে বিদেশিদের। ভারী হবে বিনিয়োগের পাল্লাও, এমনটাই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. মো. আবু ইউসুফ এ বিষয়ে বলেন, একটা দেশের বিমানবন্দর হচ্ছে, আয়নার মতো। যে মানের বিমানবন্দর এখন হচ্ছে, আমি মনে করি, এটি আরও অনেক আগেই আমাদের করা উচিত ছিল। এতে আমাদের একটা নতুন দ্বারের উন্মোচন হবে।
‘বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগ দেখতে চান। আমি মনে করি, এটাকে ঘিরে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে; কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এটার সঙ্গে সামনে-পেছনে যেসব ইন্ডাস্ট্রি আছে, সেগুলোর সার্ভিসেও বিকাশ লাভ করবে’- যোগ করেন এই অর্থনীতিবিদ।
তৃতীয় টার্মিনালে পুরোদমে যাত্রীদের সেবা মিলবে ২০২৪ সালের শেষ দিকে। এ স্থাপনাকে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন সংযোজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শাহজালালের তৃতীয় এই টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। নতুন করে তিন হাজার কোটি টাকা বাড়লে প্রকল্পের ব্যয় হবে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
খরচের বেশিরভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
বর্তমানে শাহজালালে যে দুটি টার্মিনাল রয়েছে তা এক লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। তৃতীয় টার্মিনালটি বর্তমান দুটি টার্মিনালের দ্বিগুণের বেশি। ভবনটির আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এটির নকশা করেছেন স্থপতি রোহানি বাহারিন, যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের নকশা করে বিশ্বে খ্যাতি কুড়িয়েছেন।
থার্ড টার্মিনালটির ভবন হবে তিনতলা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় এর নির্মাণকাজ। এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিত্সুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং এই তিনটি প্রতিষ্ঠান থার্ড টার্মিনাল ভবন নির্মাণকাজ করছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: