জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিখোজের চারদিন পর টাংকির ভিতর থেকে থেকে উজ্জ্বল মিয়া (১৪) নামের শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
খবর পেয়ে রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুর সাড়ে তিনটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জামালপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহরাব হোসাইন ও সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান। এরপরেই বিকাল ৪ টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে আবু সাইদ ও সাদ্দাম নামের ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত উজ্জ্বল মিয়া সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চর বালিয়া পুর্ব পাড়ার অসর আলীর ছেলে। উজ্জ্বল শেখ খলিলুর রহমান ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এর নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বালিয়া গ্রামের অসর আলীর ছেলে উজ্জ্বল মিয়া গত বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে তার কয়েকজন বন্ধুরা ডেকে নিয়ে আসে। এরপর নিখোঁজ হয় উজ্জ্বল । পরে ২৭ মার্চ রাত ১১ টায় পরিবারের লোকজন রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরেই সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। এদিকে গত রোববার বাড়ির আঙ্গিনায় তার বোন কাজ করতে ছিলেন। এসময় পায়খানার টেংকি থেকে গন্ধ বের হয়। পরে ট্যাংকির মুখ খুলে উজ্জল মিয়ার লাশ সনাক্ত করে তার বোন ও পরিবারের লোকজন। পরে পুলিশে খবর দিলে দুপুর ৩ টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে সন্ধ্যায় লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই উজ্জলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বাবা মাকে কোনোভাবেই সান্ত্বনা দিতে পারছেন না আত্মীয়-স্বজনসহ পাড়া প্রতিবেশী। বাবা মা কিছুক্ষণ পর পর জ্ঞান হারাচ্ছেন।
নিহত উজ্জল মিয়ার বাবা উসর আলী বলেন, ছেলেডারে বন্ধুরা মাইরা আবার আমার বাড়ির পাশে ট্যাংকির মধ্যে রাইখা গেছে। আমি ছেলে হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই।
নিহতের বোন অন্তরা জানান, ভাইকে কয়েকদিন ধরে খোজাখুজি করতেছি। কোন জায়গায় পাই নাই। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ আমি দুপুরে বাড়ীর সামনে কাজ করতেছি। এমন দুর্গন্ধ নাকে আসল। দুর্গন্ধ পেয়ে টাংকির মুখ খোলতেই আমার ভাই এর লাশ দেখতে পাই। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই। ফাঁসি চাই হত্যাকারীদের।
এদিকে এলাকার রফিক, শাহীন সহ কয়েকজন জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে শাস্তির দাবী জানাই। সেই সাথে সঠিক তদন্ত করে ঘটনাটি জন সম্মুখে আনা হোক।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে টাংকির মধ্যে থেকে লাশ উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় থানায় আনা হয়েছে । ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুরে প্রেরণ করা হবে।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহরাব হোসাইন জানান, গত ২৭ মার্চ আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছিল। অভিযোগ এর পরেই আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছি। ইমোতে মোবাইল ফোনে উজ্জলের মুক্তিপণ চেয়ে কল দেওয়া হয়। আমরা নাম্বারটি ট্রেকিং করেছিলাম। নাম্বারটি বন্ধ ছিল। হঠাৎ সংবাদ পেলাম বাথরুমের টাংকিতে লাশ রয়েছে। এরপরেই আমরা ২ জনকে আটক করি। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে৷
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: