নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “নারীর প্রতি সহিংসতা রুখতে, গড়ে তোলো একতা” এই প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে বাদাবন সংঘের সহায়তায় ওমেন্স ল্যান্ড রাইটস নেটওর্য়াকের সদস্য এনজিও মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংস্থা “এআরডি’র ব্যবস্থাপনায় নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে মানববন্ধন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষকাল শুরু হয় ২৫ নভেম্বর এবং ১০ ডিসেম্বর সর্বজনীন মানবাধিকার দিবস পালনের মাধ্যমে শেষ হয়। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। জাতিসংঘ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। ১৯৬০ সালের এই দিনে ডোমিনিকান রিপাবলিকে বর্বরোচিত এক নির্যাতনে তিন নারী মারা যান। তাদের স্মরণ করে ১৯৮১ সালে ২৫ নভেম্বরকে নারী নির্যাতনবিরোধী দিবস ঘোষণা করা হয়।
সমাজ কাঠামো পরিবর্তিত হচ্ছে, বিকশিত হচ্ছে সভ্যতা এবং নানাভাবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কমছে না নারীর প্রতি সহিংসতা, বর্বরতা এবং পাল্টাচ্ছে না নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি।
উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য মতে বাংলাদেশে ২০১৩ সালে ৪ হাজার ৪শ’৭জন নারী যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে। ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে আমরা এই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে দেখছি।
“এআরডি’র নির্বাহী পরিচালক ইয়াসমিন জাহান বলেন “ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, এসিড নিক্ষেপ, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে উত্ত্যক্ত করা, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন, বে-আইনি ফতোয়া, নারীর প্রতি এসব সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নারী-পুরুষ যৌথভাবে নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নির্মূলের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচিতে নারী, কিশোরী-কিশোরসহ পুরুষদের যুক্ত করে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।”
পক্ষকাল ব্যাপি কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব এর সামনে র্যালি শেষে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে দিবস ও প্রতিপাদ্যের প্রেক্ষাপট, আমাদের করণীয় এবং সরকারের কাছে দাবী সংবলিত প্রচারপত্র বিতরনের মাধ্যমে পক্ষকাল ব্যাপি অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংস্থা “এআরডি’র নির্বাহী পরিচালক ইয়াসমিন জাহানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত র্যালি শেষে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিটিভি ও দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি জনাব মোহাম্মদ আরজু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আবু হুরাইরা, স্বনির্ভর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী পরিচালক এসএম শাহীন, উর্বর বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক চন্দন কুমার দত্ত, সাথী চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ইশা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এস.সি তাপসি রায়, নারীনেত্রী গীতা রানী ঋষি প্রমুখ।
সাংবাদিকগণ, এনজিও প্রতিনিধিগন, এআরডির তরুণনারী দলের সদস্যগণ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়োজিত চিকিৎসক-শিক্ষার্থী নার্সগণ এবং সুশীল সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অপরাপর নাগরিকগন মানবন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: