• ঢাকা
  • সোমবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৬ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ছয় ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানকে অপসারণের নির্দেশ: বাংলাদেশ ব্যাংক


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ১০ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:১৯ এএম
এলসি মার্জিন নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
usa doller

নিউজ ডেস্ক:   প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে অতিরিক্ত মুনাফা করায় ছয় ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ডলারে বেশি মুনাফা করায় পাঁচটি দেশীয় ও একটি বিদেশি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেশে নগদ ডলার আসছে কম। এ কারণে হয়তো এভাবে দর বাড়ছে।

জানা গেছে, দেশের এই সংকটকালীন কোনো কোনো ব্যাংক মুনাফা অর্জনে সব চেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে ডলারকে। কোনো কোনো ব্যাংক প্রতি ডলারে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত মুনাফা করেছে। অতি মুনাফার মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি অস্থির করে তোলা ১৬টি ব্যাংক চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগামী সপ্তাহে এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি অন্য ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া মানি চেঞ্জারগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ অব্যাহত আছে।

বিভিন্ন পক্ষের তদারকির মধ্যেই খোলাবাজারে ডলারের দর রেকর্ড ১১৫ টাকায় উঠেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সেও বেড়েছে দাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি ডলারে আরও ৩০ পয়সা বাড়িয়ে সোমবার ৯৫ টাকা দরে বিক্রি করেছে।

আমদানি কমে আসা, রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধির পরও এভাবে ডলারের দর বৃদ্ধির ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই বৈদেশিক মুদ্রাটি পাচারের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া একবারে জ্বালানি তেলের মূল্য গড়ে ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে সংকট নিয়ে সব পর্যায়ে ভীতি ছড়িয়ে পড়াও ডলারের দর বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।

কারও কারও ধারণা, অর্থ পাচার বৃদ্ধির ফলে এমন ঘটতে পারে। কেননা গাড়ি, টিভি, ফ্রিজসহ ২৭ ধরনের পণ্যে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আরও বেশ কিছু পণ্যে ৭৫ শতাংশ মার্জিন নির্ধারণ করা হয়েছে। উভয় ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর মানে বিদেশি রপ্তানিকারককে যখনই অর্থ পরিশোধ করা হোক, এলসি খোলার সময়ই পুরো অর্থ নিজস্ব উৎস থেকে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

আবার অতি জরুরি নয়, এরকম তিন শতাধিক পণ্যে শুল্কহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ লাখ ডলারের বেশি এলসি খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে তথ্য দিতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। সেখানে দর প্রয়োজনীয়তাসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব কারণে আমদানিকারকদের একটি অংশ হয়তো আন্ডার ইনভয়েসিং তথা ঋণপত্রে দর কম দেখাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানান, ডলারের সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করেছে। শতভাগ এলসি মার্জিন ও ঋণ দেওয়া বন্ধের পর জুলাইয়ে এলসি খোলা কমেছে ৩০ শতাংশের বেশি। নিষ্পত্তি কমেছে ৯ শতাংশের বেশি। আবার রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একই সঙ্গে পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করার ফলে দু-তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

জানা গেছে, সোমবার বিদেশি বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১১১ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর আমদানিকারকদের থেকে ১১২ টাকা পর্যন্ত দর নিয়েছে। রপ্তানিকারকারও এখন ১০০ টাকার বেশি দর পাচ্ছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার এক দিনেই ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে।

সোমবার প্রতি ডলারে ৩০ পয়সা বাড়িয়ে ৯৫ টাকা দরে এ ডলার বিক্রি করা হয়। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক বছরে ডলারের দর ১০ টাকা ২০ পয়সা বা ১২ শতাংশের বেশি বাড়ল। গত অর্থবছর বিক্রি করা হয় ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৩৯ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। খোলাবাজারে সোমবার ১০৮ থেকে ১০৯ টাকা দরে ডলার বেচাকেনা শুরু হয়।

রাষ্ট্রীয় মালিকানার অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, টানা তিন দিন পর সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন হয়েছে। যে কারণে হয়তো কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। শিগিরই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে আসবে।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এমনিতেই বাজারের ডলারের সংকট রয়েছে। ডলার সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক এখন এলসি ফিরিয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন ব্যবস্থার কারণে ব্যাংকারদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। এসব কারণে হয়তো ডলারের দর নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image