জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : তিস্তার ধু-ধু বালুচরে চাষাবাদ হচ্ছে ভুট্টা, বাদাম, পেঁয়াজ, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, তিল, কাউন, শাক সবজি সহ বিভিন্ন প্রকার রবিশস্য। এসব রবিশস্য চাষে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন তিস্তা পাড়ের কৃষকরা। প্রায় প্রতিটি ফসলের ভালো ফলন হওয়ায় বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত কৃষকরা। নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলগুলো ঘুরে একই দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে এসব চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর বুক চিরে জেগে ওঠা হাজার হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রবি শস্য চাষ করা হয়েছে। কোথাও এতটুকু জমি পতিত নেই। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে নুড়ি পাথর, কাকনযুক্ত বালি ও মাটি বয়ে আসায় দ্রুত তিস্তার তলদেশ ভরাট হয়ে গিয়ে অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। বালুর সাথে পলি মাটির স্তর পড়ে এসব চরকে আবাদী করে তুলছে। পলি মিশ্রিত এসব চরে ভুট্টা, কাউন, মিষ্টি কুমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, বরবটি, মিষ্টি আলু, বাদাম, করলা, বেগুন, পুঁই শাক, লাউ শাকসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষের ধুম পড়ে গেছে।
কৃষকরা জানান, ধান, গম চাষ করলে যে লাভ হয়, এর চেয়ে দ্বিগুণ লাভ হয় রবিশস্যে। বিশেষ করে ভুট্টা চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন তারা। প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৪৫ মণ পর্যন্ত ভুট্টা হয়। যার মূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। আর ব্যয় হয় বিঘা প্রতি ১০-১২ হাজার টাকা। ভুট্টা ঘরে তোলার সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সব ভুট্টাচাষি বেশ লাভবান হবেন।
উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চল গুলোতে এ বছর রবিশস্যের ব্যাপক চাষ হয়েছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এই উপজেলার প্রতিটি চরাঞ্চলেও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।জলঢাকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন নদী বিধ্বস্ত। এই ৪টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের জমা-জমিতে বিভিন্ন প্রকার রবি শস্যের চাষ করেছেন। রবি শস্যকে ঘিরে নদী গর্ভে নিঃস্ব হওয়া হাজার হাজার মানুষ এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তিস্তার বুক চিরে জেগে ওঠা চরগুলোতে পলি মিশ্রিত মাটি থাকায় এগুলোতে ভুট্টা, কাউন, মিষ্টি কুমড়া, বাদাম, মিষ্টি আলুর ফলন বেশ ভালো হওয়ায় কৃষকরা এসবের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কম খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় এবং লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা আবাদের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন কৃষকরা। ভুট্টার পর এসব জমিতে তোষা পাট লাগানো হচ্ছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: