সৈয়দ শাকিল আহাদ
নোয়াখালীতে ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫২ জন্ম হয়েছিল আনিসুল হকের। ৩০ নভেম্বর ২০১৭ মাত্র ৬৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের লন্ডনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তা রাজনীতিবিদ টেলিভিশন উপস্থাপক ও আবৃতিকার ।
তার পিতা শরিফুল হক এবং মাতা রওশন আরা হক , তিনি দুই পুত্র ও দুই কন্যার জনক এরা হলেন যথাক্রমে নাভিদুল হক ,তানিশা ফারিয়ামান, ওয়ামিক উমাইরা,এবং শারাফ হক। তার স্ত্রী রুবানা হক তার মৃত্যুর পর ঘর সংসার সামলিয়ে বিজিএম ই এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দুই বছর।
আনিসুল হক পড়াশুনা করেছেন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে, তার শৈশবের বেশ কিছু সময় কাটে তার নানাবাড়ি ফেনী জেলার সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেনএবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক(সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮০ থেকে ১৯৯০-এর দশকে দশকে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। তার উপস্থাপনায় ‘আনন্দমেলা’ ও ‘অন্তরালে’ অনুষ্ঠান দুটি জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৯১ সালের নির্বাচনের পূর্বে বিটিভিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মুখোমুখি একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনও করেছিলেন তিনি। ৮০ দশকে বিটিভিতে ঈদের অনুষ্ঠান মালায় আনিসুল হকের উপস্থাপনায় “আনন্দমেলা “ দেখার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করতাম ।
তিনি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন ২০১৫ সালে।
তিনি বিজিএমই-এর সভাপতি ছিলেন, এবং গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের নেতা হিসাবে সফলতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন পরে এফবিসিসিআইর সভাপতি হন এবং পরবর্তীতে সার্ক চেম্বারের সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।
আমরা সবাই তাকে চিনতাম একজন মিষ্টি হাসির সফল টিভি উপস্থাপক হিসাবে ।
অনেক ভাল একজন লোক ছিলেন তিনি , সব সময় হাসিখুশী থাকতেন এবং মজা করতেন অপরকেও আনন্দ দিতেন এইতো সেদিন গুলশানে একটি হোটেলে জি আই জেড এর একটি প্রোগ্রামে আমার অফিসের চার সহকর্মী সহ উপস্থিত ছিলাম । আমি তার পুর্ব পরিচিত বিধায় তার পাশে গিয়ে বললাম “ আনিস ভাই আপনার সাথে আমরা সবাই একটি ছবি তুলতে চাই , তিনি বললেন অবশ্যই তবে প্রতি ছবিতে ১০ টাকা করে দিতে হবে , আমরা হাসলাম, পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন ভিয়েলাটেকস এর চেয়ারম্যান জনাব ডেভিড হাসনাত, উনাকেও ডেকে নিলেন বললেন এই যে দেখো আরও একজন সেলিব্রেটি, ডেকে নিলেন ডেভিড ভাইকে সাথে সাথে সকলেই দাড়িয়ে আনন্দঘন মুহু্র্তটিকে ফ্রেমে বন্দি করে রেখেছিলাম । মনে পড়ে ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশনে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তার দেওয়া উৎসাহিতপুর্ন বক্তব্য যখনই শুনি মনে হয় তিনি তো আমাদের সামনেই দাড়িয়ে কথাগুলো বলছেন এবং আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন ।
আনিসুল হক একজন ব্যক্তি ছিলেন না তিনি একটি ইন্সটিটিউট , তার বর্নাঢ্য কর্মময় জীবন নিয়ে গবেষনার অবকাশ রয়েছে বলে আমি মনে করি । তার গুনের কথা এত অল্প পরিসরে বলে শেষ করতে পারবো বলে মনে হয় না।
মৃত্যুদিবস উপলক্ষে তার আত্বার মাগফেরাত ও জান্নাত কামনা করছি ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: