নিউজ ডেস্ক: বাংলা এবং ওড়িশার বুকে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে একটি ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হবে বলেও সূত্রে জানান।বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এক কফির নামে? তা নিয়ে যথেষ্ট কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিভিন্ন দেশ। যেমন এর আগে বাংলার বুকে আঘাত হানা ‘সিত্রং’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। তেমনই ‘মোকা’ নামটি দিয়েছে আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত ইয়েমেন।
যদিও ‘মোকা’ শব্দের আক্ষরিক কোনও অর্থ নেই। ইয়েমেনের বন্দর শহর ‘মোখা’ (উচ্চারণ মোকা)-র নামে ঘূর্ণিঝড়ের এই রকম নামকরণ করা হয়েছে। ১৯ শতক পর্যন্ত মোখা ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। এই শহরেই বিখ্যাত কফি ‘মোকা’র চাষ হয়। কফির নামকরণও হয়েছে শহরের নামেই।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে পারে। শক্তি সঞ্চার করে ৬ মে নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপ।
ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে ভারতে র আবহাওয়া দপ্তরের চেয়ারম্যান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, “একটি বিশেষ মডেল অনুযায়ী মনে হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে। আমরা নজর রাখছি। নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করা হবে।’’
যদিও ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ আসছেই, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে নিশ্চিত ভাবে এমন কিছু জানানো হয়নি। ঘূর্ণিঝড় যদি আসে তবে তার আর বেশি দেরি নেই। এই সপ্তাহান্তেই তার জন্য প্রস্তুতি নিতে হতে পারে।
বুধবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি যদি তৈরি হয়, তবে তা হতে পারে আগামী সপ্তাহের শুরুতেই। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে দিনক্ষণ নিয়ে জল্পনা শুরু হলেও হাওয়া অফিস নির্দিষ্ট কোনও তারিখের কথা জানায়নি।
তবে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিক বলতে আগামী সোম থেকে বুধবার অর্থাৎ ৬ মে থেকে ১০ মে-র মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ঘূর্ণিঝড় আদৌ আসবে কি না তা নিয়েই অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
হাওয়া অফিসের কথায়, বঙ্গোপসাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্তের কারণে সংলগ্ন উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তামিলনাড়ু, ওড়িশার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি রয়েছে বলে অনুমান করছেন আবহবিদরা।
বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে, তা আরও শক্তি বৃদ্ধি করলে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে সেই নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কি না সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
তবে ঘূর্ণিঝড় আসুক বা না আসুক, এই সপ্তাহে শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ঝোড়ো হাওয়া এবং একই সঙ্গে বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর।
মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। প্রয়োজন পড়লে কী ভাবে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যাবে, মূলত তা নিয়েই সেই বৈঠকে আলোচনা হয় বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ঘূর্ণিঝড় হানা দিলে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ যেন শীঘ্র শুরু হতে পারে সেই পরিকল্পনার দিকেও জোর দেওয়ার কথা বৈঠকে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্য সচিব পিকে জেনাকে নিয়মিত পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে এবং সমস্ত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন পট্টনায়ক। ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি তৈরি হলেও তা সামলানোর জন্য মোট ১৭টি উদ্ধারকারী দল এবং ২০টি ‘ওড়িশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স’ (ওডিআরএএফ) দল প্রস্তুত রয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: