• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ফুলবাড়ীতে বিধবার মানবেতর জীবনযাপন, ২ শিশুর লেখাপড়ায় চান সহায়তা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৫৬ পিএম
ফুলবাড়ীতে বিধবার মানবেতর জীবনযাপন, ২ শিশুর লেখাপড়ায় চান সহায়তা
লেখাপড়ার ফাঁকে করছে গুড়ো হলুদ, মরিচের ব্যবসা

জাকারিয়া মিঞা, ফুলবাড়ী প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন রফিকুল ইসলাম। পাঁচ বছর আগে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন ডপ তিনি। মৃত্যুকালে রেখে যান স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান। দিনমজুর রফিকুল ইসলামের সম্পত্তি ছিল বসতবাড়ির ৪ শতাংশ জমি আর জরাজীর্ণ দু’টি ঘর। স্বামীর মৃত্যুতে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে নানা সংকটে দিনাতিপাত করছে তার স্ত্রী ছামিনা বেগম। দুই শিশু সন্তানের জন্য দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোগাতে  প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন তিনি। কাজ মিললে খাবার জোটে শিশুদের মুখে। কাজ নাই তো উপোস থাকতে হয় মা ছেলেদের।

শত কষ্টের মাঝেও ছেলেদের লেখাপড়া বন্ধ করেননি ছামিনা বেগম। বড় ছেলে নবম এবং ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট ছেলে লেখাপড়ার ফাঁকে করছে গুড়ো হলুদ, মরিচের ব্যবসা। প্রচলিত আইনে শিশুশ্রম অবৈধ হলেও শিশু সন্তানের শ্রমের সামান্য আয়ে খেয়ে না খেয়ে চলছে বিধবার সংসার। অভাব অনটন নিত্যসঙ্গী হলেও তাদের কপালে জোটেনি সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ দু’টি ঘরে বসবাস ওই বিধবার। বাড়ির উঠানে দেখা মিললো বিধবা ছামিনা বেগমের। স্বামীর মৃত্যুর পরে কিভাবে সংসার চলছে জানতে চাইলে ছামিনা বেগম বলেন, আমর স্বামী দিন মজুর ছিল। তাঁর আয়ে সংসার চলতো। দুই শিশু সন্তান রেখে তিনি মারা যান। এরপরে নিজের ও মাসুম বাচ্চা দুটোর মুখে দু'বেলা দুমুঠো খাবার তুলে দিতে মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ শুরু করি। কাজ না পেলে শুধু পানি খেয়েই দিন পার করতে হয়। ক্ষুধার জ্বালায় মাসুম বাচ্চা দু'টো যখন ছটফট করে বুকটা কান্নায় তখন ভেঙ্গে যায়। চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, এখন বাচ্চা দু'টো একটু বড় হয়েছে। ছোট ছেলে সেতু লেখাপড়ার পাশাপাশি হলুদ মরিচের গুঁড়ো বিক্রি করে। সে প্রতিদিন স্কুল থেকে এসে কখনো বাড়িতে বাড়িতে, কখনো হাটে বাজারে হলুদ মরিচের গুঁড়ো বিক্রি করে সামান্য যা আয় করে তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে। 

সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পান কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বামী মারা গেছে পাঁচ বছর হলো। বিধবা ভাতার জন্য মেম্বার চেয়ারম্যানকে অনেকবার বলেছি লাভ হয়নি। আমার আশপাশের অনেকেই কত সরকারি সুবিধা ভোগ করছে। আমার কপালে কি কিছুই জুটবে না? স্কুলের মাস্টার মাঝে মাঝে বলে আপনার ছেলে দুইটা খুব মেধাবী, লেখাপড়া বন্ধ করবেন না। এতো টানাটানির মধ্যে ছেলে দুইটা আর কতদিন লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে জানিনা। যদি সরকারি বা বেসরকারি ভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেতাম তাহলে অন্তত ছেলে দুটোর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারতাম। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image