• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ফুলবাড়ীতে আমন চাষাবাদে ব্যয় বাড়ায় সংকটে কৃষক


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৫৮ পিএম
আমন চাষাবাদে
ব্যয় বাড়ায় সংকটে কৃষক

ফুলবাড়ী প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা, কৃষি শ্রমিকের চড়া মজুরী, সার, বীজ, কীটনাশকসহ প্রায় সকল কৃষি যন্ত্রপাতির মূল্য বৃদ্ধির ফলে চাষাবাদে ব্যয়ও বেড়েছে কৃষকের।  সবশেষ ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যয় লাফিয়ে বেড়েছে। প্রতি বছর লাভের আশায় চাষাবাদ শুরু করলেও চলতি আমন মৌসুমে ধান চাষাবাদের শুরুতেই লোকসানের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন চাষীরা। তারা বলছেন, অস্বাভাবিক মূল‍্য বৃদ্ধির কারণে আমরা চরম সংকটে পড়েছি।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি না হওয়ায় ভাদ্রের শুরুতেও অনেক চাষি জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছেন। অনেকে জমিতে চারা রোপণ শেষ করলেও শুকিয়ে যাওয়া জমিতে বৈদ্যুতিক পাম্প ও ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে বাড়তি খরচ করে সেচ দিচ্ছেন। উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, পানির অভাবে সেচ দিয়ে চাষাবাদ করতে হচ্ছে। কৃষি শ্রমিকের দামও বেশি। প্রতি বিঘা জমিতে চারা রোপণের জন্য শ্রমিকদের দেড় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে টিলার মালিকরাও জমি চাষের মূল্য বাড়িয়েছে। এবারে প্রতি বিঘা জমিতে চারা রোপণ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে আমন মৌসুমে চাষাবাদের খরচ অনেক বেড়েছে। পশ্চিম ধনিরাম এলাকার কৃষক মোকছেদুল হক বলেন, আমি পেশায় একজন বংশি বাদক। আমার পরিবারের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সামান্য কিছু জমিতে ধান চাষ করি। এবারে জমিতে ধান চাষ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বৃষ্টি নাই জমিতে পানি নিয়ে চাষ মই করে চারা লাগাতে হবে। জমি হালচাষ খরচ বেশি, কামলারাও বেশি টাকা চাচ্ছে। তাই নিজের জমিতে নিজেই চারা রোপণ করছি। জমি চাষ বাবদ বেশি টাকা নেওয়ার বিষয়ে গেটের বাজার ও শাহবাজার এলাকার পাওয়ার টিলার মালিক শাহ জালাল মিয়া ও বাদল সরকার বলেন, আমাদের টিলারের সব ধরনের যন্ত্রপাতির দাম বেড়েছে। তেল মবিলের দামও এখন অনেক বেশি। টিলার চালাতে দু'জন চালককে টাকা দিতে হয়। খুব খাটাখাটুনি করেও আমরা তো লাভের মুখ দেখতে পারি না। চন্দ্রখানা গ্রামের কৃষক বাদশা সরকার বলেন, আমি এবার তিন বিঘা জমিতে আমন চাষাবাদ করেছি। বৃষ্টি অভাবে ক্ষেতে নিয়মিত সেচ দিতে হচ্ছে। ক্ষেতের অবস্থা আপাতত ভালো আছে। দু-একদিনের মধ্যে জমিতে সার ও নিড়ানি দিতে হবে। শ্রমিকের দাম বেশি, সারেরও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যেভাবে টাকা খচর করে চাষাবাদ করতে হচ্ছে তাতে আবাদে লোকসান হওয়ার শঙ্কায় আছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, উপজেলায় ১১হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করায় কৃষকদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে ক্ষেতের পোকা দমন পদ্ধতি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদনে বাড়তি খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস বলেন, চলতি আমন মৌসুমে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চাষাবাদের জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে উপজেলার লাইসেন্স প্রাপ্ত সকল ডিলারদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ইতিমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় সহ কয়েক জন সার ব্যবসায়িকে সতর্ক করা হয়েছে। কৃষি অফিসার নিজেও মনিটরিং এ যাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনার যাতে কোন রকম ব্যত্যয় না ঘটে সেজন্য  আমাদের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / জাকারিয়া মিঞা/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image