• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখলেন ভুটানের রাজা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:১৭ পিএম
মাধবরামে ২১১ একর জায়গাজুড়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল
অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন রাজা

নিউজ ডেস্ক:  কুড়িগ্রামের প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখলেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক। বাংলাদেশ ও ভুটানের যৌথ বিনিয়োগে অঞ্চলটি গড়ে উঠবে। রাজার এই পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামবাসী আশায় বুক বেঁধেছেন।

কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কের পাশে ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরামে ২১১ একর জায়গাজুড়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সদরের ধরলা নদীর পাড়ের এই এলাকা পরিদর্শন করেন রাজা। তিনি ১৫ মিনিট ধরে জায়গাটি ঘুরে দেখেন।

এর আগে ১৪ সদস্যের সফরসঙ্গী নিয়ে সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন রাজা। সড়কপথে রংপুর হয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছে দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তাঁকে কুড়িগ্রামের স্থানীয় খাবার পরিবেশন করা হয়। অন্যান্য খাবারের মধ্যে তাঁকে ক্ষিরমোহন, রসমঞ্জুরি, বিশেষ স্যুপ, মিষ্টি পরিবেশন করা হয়। স্থানীয় খাবারের প্রশংসা করেছেন তিনি।

ভুটানের রাজাকে একনজর দেখার জন্য কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান ধরলার পাড়ে। স্থানীয় কৃষক মো. আনিস বলেন, ‘বাহে হামার জেলার কষ্টের কথা আর কি কমো। ছয় মাস এই জাগাত ধান আবাদ করি। বাকি মাসগুলা ঢাকাত রিকশা চালাই। আল্লাহর রহমতে এখানে বড় কারখানা হবে, আমরা এখানে কাজ করব, বউ-বাচ্চা নিয়ে সুখে থাকব।’

২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন এ জেলায় তিনি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে জেলাবাসীর মঙ্গা আর দারিদ্র্যের কালিমা চিরতরে দূর করবেন।  প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে এক সভায় ভুটানের রাজার কাছে কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুসারে কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হতে যাচ্ছে বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তা জেলার দারিদ্র্য, মঙ্গা আর বেকারত্ব ঘোচাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘আমাদের জেলা সব দিক থেকে পিছিয়ে। আমাদের বড় সমস্যা চরের ছেলেমেয়েরা বেকার, কাজ করার সুযোগ পায় না। এখানে বড় কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান নাই। ভুটানের রাজাকে দেখলাম, খুব আনন্দ হচ্ছে। আমরা পড়াশোনা শেষ করে হয়তো এখানেই কাজ করতে পারব।’

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে অবকাঠামোগত ভিত্তি দাঁড় করাতে তিন বছর সময় লাগবে। এখানে ভুটানের কাঁচামাল ও ভারি শিল্পের পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে কৃষিজাত পণ্য কমলার জুস ও মেলামাইনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এতে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ কাজ করার সুযোগ পাবে।

কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার বলেন, ‘কুড়িগ্রামের মতো দারিদ্র্যপ্রবণ জেলায় জিটুজি-ভিত্তিক এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্বপ্নের দরজা খুলে গেল। ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামে আসায় আমরা খুব খুশি। কুড়িগ্রামের স্থানীয় খাবারের তিনি প্রশংসা করেছেন। অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ শুরু হলে তিনি আবার আসবেন বলেছেন।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ভারত ও ভুটানের কানেক্টিভিটি বেশ ভালো। কুড়িগ্রামের দুটি স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌ-বন্দরের সঙ্গে ভুটানে যোগাযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলটির জন্য ধরলা পাড়ে আরও ৮৬ একর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা জেলার ভুরুঙ্গামারী সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের উদ্দেশে রওনা করেন। এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন প্রমুখ তাঁকে বিদায় জানান।

ঢাকানিউজ২৪.কম / এইচ

আরো পড়ুন

banner image
banner image