
নিউজ ডেস্ক : গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন। ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু।
এই ১৯ জনের মৃত্যুর মধ্যে ১৭ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। বাকি দুজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার বাইরে। এ নিয়ে সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৬। চলতি মাসের ১৮ দিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ৯৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরো ১ হাজার ৭৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৯২। এদের মধ্যে জুলাইয়ের ১৮ দিনে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৮১৪ জন। নতুন রোগীদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৯২২ জন ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৭০ জন ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ৫ হাজার ৫৫২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার আর সারা দেশে অন্যান্য হাসপাতালে সোয়া দুই হাজার রোগী।
সরকারের দেওয়া তথ্য সারাদেশের প্রকৃত ডেঙ্গুর চিত্র নয় বলে জানিয়েছে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতর। মূলত রাজধানী ঢাকায় ২০টি সরকারি ও ৪৬টি বেসরকারি হাসপাতালে যেসব ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে তাদের তথ্য কেবল দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে জেলা হাসপাতালের তথ্য। তবে এর বাইরে অসংখ্য রোগী সারাদেশের বিভিন্ন ক্লিনিক, ছোট-বড় হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসা নিলেও সে তথ্য নেই সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নকারী ও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটির কাছে।
চলতি বছর ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর হার যে গতিতে বাড়ছে, তাতে বড় ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২৩ বছর ধরে ডেঙ্গুকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও তা মূলত মৌসুমকেন্দ্রিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ ছিল। কোনো রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে যে অবস্থানে থেকে কৌশল নির্ধারণ করা প্রয়োজন তা হয়নি। রোগীর অনুপাতে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। কেননা রোগীরা শেষ মুহূর্তে চিকিৎসার আওতায় আসছেন। আর যে রোগী ও মৃত্যু সংখ্যা আমরা জানছি তা হাসপাতালভিত্তিক। এর বাইরে যেসব রোগী রয়েছে এবং মৃত্যু হচ্ছে তা হিসাবের বাইরে থাকছে।
সম্প্রতি রাজধানীতে ডেঙ্গুবিষয়ক এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ডা. মুশতাক হোসেন বলেছিলেন, চলতি বছর মশাবাহিত সংক্রামক রোগ ডেঙ্গু উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য সিটি কর্পোরেশনগুলো বিভিন্ন এলাকায় জরিমানা করছে। তবে জরিমানা করে জনস্বাস্থ্যের সমস্যার সমাধান করা যায় না। বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: