• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

অর্ধেক যাত্রীবাহী বাস বন্ধ মেট্রোরেলের প্রভাবে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ১২ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০:৪১ এএম
অর্ধেক যাত্রীবাহী বাস বন্ধ মেট্রোরেলের প্রভাবে
বাস - মেট্রোরেল

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর উত্তরা-মতিঝিল রুটে মেট্রোরেল চালুর হওয়ার পর থেকে দৃশ্য পালটে গেছে। এ পথে যানজট অনেকটাই কমেছে। যাত্রীর অভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে প্রায় অর্ধেক বাস-মিনিবাস। যানবাহন বিক্রির চেষ্টা করছেন অনেক পরিবহন মালিক। আর পরিবহনশ্রমিকেরা পেশা পরিবর্তনের উপায় খুঁজছেন। এছাড়া মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ায় পালটে গেছে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার রাস্তার চিত্র। আর এর প্রভাবে যাত্রী পাচ্ছে না অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবার-পাঠাও।

মেট্রোরেল ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন করা হলে যাত্রীর সংকট শুরু হয় মিরপুর-মতিঝিল রুটের বাসগুলোয়। মেট্রোরেলের কারণে যাত্রী হারালেও বাসের সংকট  সেভাবে সামনে আসেনি। তবে ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের পর পূর্ণমাত্রায় যাত্রীসেবা শুরু করে মেট্রোরেল। যেখানে মেট্রোরেল যাত্রীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে,  সেখানে যাত্রীর সংকটে পড়েছে বাসগুলো।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেলে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়, ঠিক তার নিচে ধুঁকে ধুঁকে চলা  মেয়াদহীন বাস-মিনিবাসে চলছে যাত্রীর খরা। আধুনিক যাতায়াতের সুযোগ পেয়ে উত্তরা-মিরপুর-মতিঝিল রুটের যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ফিটনেস আর শৃঙ্খলাহীন বাস মিনিবাস থেকে। যুগের পর যুগ যাদের হাতে জিম্মি ছিলেন এই পথের যাত্রীরা।

সিটিং সার্ভিসের নামে ওয়েবিলের অত্যাচার কিংবা ১৫ টাকা জ্বালানির দাম বাড়ায় ২৭ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি। প্রতিবাদ করলে এসব পরিবহন থেকে নামিয়ে দেওয়ার রেকর্ড পর্যন্ত আছে। অথচ সেই সব পরিবহনই এখন যাত্রী খুঁজছে। মিরপুর ১২ থেকে যাত্রাবাড়ীগামী বিকল্প পরিবহনের এই সহকারীর আয় অর্ধেকের নিচে নেমে আসায় তিনি গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আধা ঘণ্টা ডাকাডাকি করেও পিক আওয়ারে তার গাড়িতে উঠেছে দুজন যাত্রী।

পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, আগে যে পরিমাণ যাত্রী হতো, তা এখন নেই বললেই চলে। মেট্রোরেল চালুর আগে দৈনিক যে বেতন পাওয়া যেত, তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন নিজে চলব কীভাবে আর সংসারই বা চালাব কী করে? শ্রমিকদের হতাশায় দগ্ধ মালিকেরাও। যাত্রীখরায় কেউ কেউ গাড়ি বন্ধ রেখেছেন, কেউ আবার বাস বিক্রির উপায় খুঁজছেন। বিকল্প পরিবহনের ম্যানেজার মো. সবুজ জানান, যাত্রীস্বল্পতায় ৪৫টি বাসের ২৫টি রাস্তায় নামাতে পারেননি। এই রুটের অন্য পরিহবনগুলোরও প্রায় একই অবস্থা। পরিবহন নেতারা বলছেন, বাসমালিকদের বাঁচাতে বিকল্প পথ পাচ্ছেন না তারা।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন কোনো রকম টিকে আছেন বাসমালিকেরা। হয়তো অনেকেই এই গাড়ির ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। সরকার যদি তাদের ব্যাপারে  কোনো নতুন উদ্যোগ না নেয়, তাহলে এই ব্যবসা থেকে মালিকদের সরে যেতে হবে। এমন বাস্তবতা থেকে পরিবহন মালিকদের শিক্ষা নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জনগণকে জিম্মি করে নয়, বরং নিয়ম মেনে সেবা দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনার পরামর্শ তাদের।

যাত্রী পাচ্ছে না উবার-পাঠাও: রাজধানীর কয়েকটি পয়েন্টে রাইডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর  থেকে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা উবার-পাঠাওয়ের ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। এমনকি মেট্রোরেল আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ায় এয়ারপোর্ট, উত্তরা, মিরপুর, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ফার্মগেট, আগারগাঁও, মতিঝিলসহ অনেক রোডে যাত্রী নেই বললেই চলে। আবার এসব রোডে যাওয়ার সময় এক-দুটি রাইড পেলেও আসার সময় যাত্রী পাওয়া যায় না।

যাত্রীরা বলেন, ‘রাজধানীতে যেসব এলাকার আওতায় মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে, সেই সব এলাকায় আমরা খুব সহজেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি। টাইমও মেইনটেইন করা যাচ্ছে, ভাড়াও কম, স্মার্ট যোগাযোগব্যবস্থা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম, ভোগান্তিও নেই।’

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image