নিউজ ডেস্ক : দেশের ৯টি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে পাসের হারে এ বছর প্রথম হয়েছে বরিশাল শিক্ষাবোর্ড। গত বছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৫৭ বেড়ে এবার পাসের হার ৯০ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে পাসের হার বাড়লেও, ধারাবাহিকভাবে তিন বছর ধরে কমছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। তবে বেড়েছে শতভাগ পাস করা স্কুলের সংখ্যা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলের গণ্ডি পেরোনো শিক্ষার্থীদের হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জনে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এ বছর ৯০ হাজার ১৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৮১ হাজার ৩৩৯ জন। পাসের হার গত বছর ৮৯ দশমিক ৬১ শতাংশ থাকলেও এবছর তা শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ১৮ এ।
গত তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমেছে জিপিএ ফাইভের সংখ্যা। ৩ হাজার ৪৫৭ জনে কমে এবছর জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ৬ হাজার ৩১১ জন। আর পাসের হার বাড়তে থাকলেও পড়াশোনার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্ষোদ শিক্ষকরাই।
শিক্ষকদের অভিযোগ, পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস পূর্ণ না করেই পাসের পেছনে দৌড়াচ্ছে শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা।
বরিশাল হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ফখরুজ্জামান বলেন, ‘কেউ বোর্ডের বই পড়ে না। সবাই কোচিং নির্ভর। ফলে প্রতিনিয়ত আমরা পাস করা শিক্ষার্থী পেলেও জিপিএ-৫ পাওয়া ভালো শিক্ষার্থী হারাচ্ছি।’
বরিশাল শের-ই-বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিক্রম চক্রবর্তী বলেন, ‘সবাই আজকাল শর্টকাট পন্থায় পড়াশোনা করে। ফলে পাসের হার বাড়ছে। তবে ভালো শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা মনেকরি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগী হওয়ার এখনই সময়। নাহয় ভবিষ্যৎ খুবই খারাপ হবে।’
বরিশাল বোর্ডের গত ৩ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, শতভাগ পাস করা স্কুলের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছেই। হিসেব বলেছে, ২০২১ সালে ৯০টি, ২০২২ সালে ১৪৯টি ও ২০২৩ সালে ২৩১টি স্কুল শতভাগ পাস করেছে। এছাড়া মেয়েদের পাসের হার ৯১ দশমিক ৯৪ শতাংশ ও ছেলেদের পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। যথারীতি ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে মেয়েরা।
বরিশাল ব্রজমোহন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহানারা আক্তার বিনা বলেন, মেয়েরা ছেলেদের থেকে পড়ায় বেশি আগ্রহী। তাই ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাসের হার ও জিপিএ-৫ বেশি। সারাদিন মোবাইল নিয়ে থাকে বর্তমানে ছেলেমেয়েরা। অভিভাবকদের উচিত সব সময় তাদের সন্তানের দিকে নজর দেয়া। তাহলেই রেজাল্ট ভালো হবে।
পাসের হারে বরিশাল বোর্ডে প্রথম হয়েছে ভোলা জেলা। ৬ জেলার সবার শেষে পটুয়াখালী। সারাদেশে ৯টি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে বরিশালের অবস্থান সবার প্রথমে।
নিউজ ডেস্ক : বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গাইন বলেন, আমরা এবার দেশ সেরা। জিপিএ-৫ কমার কারণ হিসেবে বলা যায়, করোনার পর আমরা পরীক্ষা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। জেএসসি থেকে মোট ৪টি বিষয় যোগ করা হয় এসএসসিতে। তবে এবার শতভাগ মার্কে সব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। তাই কিছুটা জিপিএ-৫ কমেছে। তবে পাশের হার বাড়ায় আমরা খুশি। এর সব কৃতিত্ব শিক্ষার্থী,শিক্ষক ও অভিভাবকদের।
বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ১৯০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার সময় ৩৫টি ভিজিলেন্স টিম কাজ করে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: