নিউজ ডেস্ক : ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটাল বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে। ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্প্রতি অনুমোদিত পথনকশায় অপেক্ষাকৃত সবল কোম্পানির সঙ্গে দুর্বল কোম্পানির একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনার মাঝে এ সিদ্ধান্ত জানা গেল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার ঘটনা হবে প্রথম। অবশ্য এর আগে ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংক কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার ঘটনা রয়েছে। চরম খারাপ অবস্থায় থাকা আরও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূতকরণের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। আর্থিক খাত সংস্কারের লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত অনুমোদনের পর এখন একীভূতকরণ-পরবর্তী ইউনিয়ন ক্যাপিটালের আমানতকারীর অর্থ কীভাবে পরিশোধ করা হবে, তার পরিকল্পনা জানাতে হবে। এ ছাড়া সম্পদের মূল্যায়ন, মূলধন, ঋণ আদায় প্রক্রিয়া, কর্মীদের পুনর্বহালসহ সব বিষয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি করতে হবে। তালিকাভুক্ত হওয়ায় এ বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে ঘোষণা দেবে। সে আলোকে পুরো প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা হবে।
সূত্র জানায়, প্রাইম ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটাল উভয় প্রতিষ্ঠানের সম্মতিতে শর্তসাপেক্ষে একীভূতকরণের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানকে জানানো হবে। প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালনা পর্ষদে কর্তৃত্বে রয়েছেন জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ী ও প্রাইম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা। আজম জে চৌধুরী ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে পরিচালক। তাঁর ছেলে তানজিল চৌধুরী প্রাইম ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান। আমানতকারীর জমা অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে না পারা, টানা পাঁচ বছর ধরে বড় লোকসানসহ বিভিন্ন সংকটে থাকা ইউনিয়ন ক্যাপিটালকে প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার মূল উদ্যোগ নেন আজম জে চৌধুরী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের লোকসান হয়েছে ৬২৮ কোটি টাকা। মূলত শেয়ারবাজারে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করে লোকসানের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি সংকটে পড়েছে। ইউনিয়ন ক্যাপিটাল থেকে এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্টে ঋণ রয়েছে ৪৭৩ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এ ঋণের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে কোনো আদায় নেই। এর বাইরে আরও কিছু ঋণ আটকে গেছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে আমানতকারীর অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে পারছে না ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।
প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের তালিকায় রয়েছে পলমল গার্মেন্টস, ইসি সিকিউরিটিজ, এনরিলকো লিমিটেড, খুরশিদা চৌধুরী, কাজী গোলাম সামিউর রহমান, ওয়াকার এ. চৌধুরী, মেহেরুননেসা হক, প্রকৌশলী এম আবু তাহের, আব্দুস সালাম, রুনা এন. আলম ও রুমানা শরিফ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: