• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর আজ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:৩৪ এএম
ইউরেনিয়াম জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর আজ
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিউজ ডেস্ক : ইতিহাসের আরও একটি সাফল্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রূপপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর হচ্ছে জ্বালানি ইউরেনিয়াম। 

এতো বড় স্থাপনা বাস্তবে রূপ নেয়ার জন্য পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ পথ। শুরুর উদ্যোগটা ষাটের দশকে। কিন্তু পূর্ব আর পশ্চিম পাকিস্তান দ্বন্দ্ব, বৈষম্য থেকে প্রকল্প বাতিল করে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানের করাচিতে। দেশ স্বাধীনের পর এটি বাস্তবায়নে ফের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭৫-এর পটপরিবর্তনে এ উদ্যোগে আবারও পড়ে ভাটা।

অর্ধযুগ আগেও পদ্মা পাড়ে যে বিস্তীর্ণ ভূমি ছিলো কেবলই খোলা মাঠ, সঙ্গে উঁকি দিচ্ছিলো নতুন সম্ভাবনার; জাতীয় সক্ষমতার জানান দিয়ে আজ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে দেশের সবচেয়ে বড় আর ব্যয়বহুল স্থাপনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর ১৭৫ মিটার উঁচু ৪টি কুলিং টাওয়ার জানান দিচ্ছে পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।

দীর্ঘ ২১ বছর পর আবারো গতি পায় রূপপুর। জাতীয় জ্বালানি নীতি ১৯৯৬ তে সুপারিশ করা হয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তখনকার চেয়ারম্যান ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া পরিকল্পনা নেন ৬শ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র নির্মাণে। 

১৯৯৭ সালের ১৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে গতি আনার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী গ্রহণ করা হয় মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বেশকিছু প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম। ২০০০ সালে অনুমোদন দেয়া হয় বাংলাদেশ পরমাণু বিদ্যুৎ কর্মপরিকল্পনা।

 
রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলে থমকে যায় পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদক্ষেপ। এরপর ২০০৯ সালে আরো একবার জোর আসে সে উদ্যোগে। ওই বছরের ১৩ মে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিষয়ক সমঝোতা চুক্তি হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সই হয় আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তি।
 
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আরো কিছু ধাপ পেরোনোর পর ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মস্কো সফরে আসে আরেক দফা অগ্রগতি। প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণকাজ সম্পাদনে সই হয় স্টেট এক্সপোর্ট ক্রেডিট চুক্তি। ২৬০ একর জমি অধিগ্রহণ, আর বেশ কয়েকটি সমীক্ষা চালিয়ে সিদ্ধান্ত হয় রূপপুরে ২শ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের।

একই বছরের ২ অক্টোবর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রথম পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
প্রাথমিক পর্যায়ের বিভিন্ন কাজ সম্পন্নের পর ২০১৭ সালে শুরু হয় মূল অবকাঠামো বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতা। ৩০ নভেম্বর কংক্রিট ঢালাইয়ের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরের বছর ১৪ জুলাই ভিত্তি গড়ে দেন দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণকাজের।

এরপর কোভিড মহামারিসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সামনে এলেও সব চ্যালেঞ্জ মাড়িয়ে এগিয়ে চলে এ কেন্দ্রের নির্মাণযজ্ঞ। কোনো কোনো কাজ সম্পন্ন হয় নির্ধারিত সময়ের আগেই। একে একে দৃশ্যমান হতে থাকে রিঅ্যাকটর ভবন, কুলিং টাওয়ারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটে বসানো হয় পরমাণু বিদ্যুতের হৃদপিণ্ড খ্যাত রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল, এক বছরের মাথায় বসে দ্বিতীয় ইউনিটে।

নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা, আগামী বছরে রূপপুরের প্রথম ইউনিট, আর পরের বছর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে মিলবে বিদ্যুৎ।

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞার জের ধরে অনেক হিসেব-নিকেশ পাল্টে গেলেও প্রতিশ্রুত সময় সেপ্টেম্বরেই দেশে আসে পরমাণু জ্বালানি। আর সেটির আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরে একই মঞ্চে ভার্চুয়ালি আসীন হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এখন অপেক্ষা কেবল, গ্রাহকের দোরগোড়ায় রূপপুরের বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার ক্ষণগণনার।
 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image