নিউজ ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফর সামনে রেখে বাইডেন প্রশাসন নয়াদিল্লিকে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক ড্রোন কেনার চুক্তি এগিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এসব ড্রোন কেনার বিষয়ে ভারত বহু দিন ধরে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে চুক্তি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এ চুক্তি হলে ভারত পাবে মার্কিন সি-গার্ডিয়ান ড্রোন। এগুলো তৈরি অস্ত্র বহনে সক্ষম।
সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাধা কাটাতে চায় ওয়াশিংটন। এ জন্য মার্কিন আলোচকরা আগামী ২১ জুন থেকে শুরু হওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির তিন দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরের দিকে তাকিয়ে আছেন। সূত্র জানিয়েছে, মোদির সফরের দিন-ক্ষণ ঠিক হওয়ার পর থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পেন্টাগন এবং হোয়াইট হাউস ওই অস্ত্র চুক্তি নিয়ে অগ্রগতি দেখাতে ভারতকে চাপ দিচ্ছে। মার্কিন কোম্পানি জেনারেল অ্যাটমসের তৈরি অন্তত ৩০টি এমকিউ-৯বি সি-গার্ডিয়ান ড্রোন কেনার চুক্তি করতে বলছে তারা।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁদের বৈঠকে যৌথ উদ্যোগে যুদ্ধাস্ত্র ও স্থলযান তৈরির বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন। তবে হোয়াইট হাউস, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পেন্টাগন এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা চুক্তি নেই। চীনকে কোণঠাসা করতে ভারতের সঙ্গে দেশটির ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। তবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর ভারতের অবস্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা হতাশ। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে একঘরে করলেও ভারত দেশটির সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
অস্ত্র কেনা নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্ভাব্য চুক্তিটি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মধ্যেই আটকে আছে। এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতির তথ্য পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, ঠিক কতগুলো ড্রোন কিনবে– এ বিষয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। শুরুর দিকে ৩০টি কেনার কথা থাকলেও পরে তা ২৪টিতে দাঁড়ায়। গত মাসে এ সংখ্যা ১৮-তে পৌঁছেছে। সূত্র জানায়, কোনো সংখ্যাই চূড়ান্ত করা হয়নি।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা এখন ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আমরা মনে করি, এমকিউ-৯এস কেনা তাদের জন্য ভালো।’ এ অবস্থায় মঙ্গলবার নয়াদিল্লি সফর করছেন বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান।
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রতি বছরই ওয়াশিংটন সফর করেছেন মোদি। তবে এবার দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা। এনডিটিভি জানায়, সফর শুরুর দিন ২১ জুন নিউইয়র্কে নেমে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেখান থেকে ওয়াশিংটনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ফার্স্টলেডি জিল বাইডেনের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। পরদিন (২২ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ভোজে অংশ নেবেন। এদিন তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে দু্ই দেশের মধ্যে প্রযুক্তির অংশীদারিত্ব, প্রতিরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
হোয়াইট হাউসের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পিটিআই জানায়, নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ‘ইতিবাচক কৌশলগত অর্জন’-এর দিকে আছে। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া আইডিয়াস সামিট’-এ দেওয়া এক বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের মুখ্য উপজাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে অংশীদারিত্ব গভীর এবং অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি মূল্যবান।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: