
নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে অফিস ছুটি শেষে ইফতারের আগ পর্যন্ত সময়ে রাজপথে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হচ্ছে। প্রধান সড়ক গড়িয়ে অলিগলি, উপসড়কেও ছড়িয়ে পড়ছে যানজটের প্রভাব। গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে এই চিত্র আরও নাজুক আকার ধারণ করে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
রমজান মাস শুরুর আগেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে রমজান মাসে যানজট সহনীয় রাখতে ১৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশনারও ঠিকমতো বাস্তবায়ন নেই।
নির্দেশনার দুই নম্বরে ছিল মহানগরীতে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনালসংলগ্ন প্রধান সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে পারবে না। এই নির্দেশনার তোয়াক্কা করছেন না চালকরা।
গতকাল সকালে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে দেখা যায়, বনানীমুখী সড়কে রাস্তায় বাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া টার্মিনাল থেকে বাস বের হয়ে সড়কে থামিয়ে যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ বলে, ২০-৫০ গজ পরপর ট্রাফিক পুলিশ থাকা তো সম্ভব নয়। আর এই সুযোগটা নিচ্ছেন চালকরা। পুলিশ সামনে পড়লে গাড়ি চলমান রাখে, আড়ালে গেলে একই ঘটনা ঘটায়।
মহানগরের ভেতরেও যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো করা হচ্ছে। ক্রসিংগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সামনেই অনেক স্থানে যাত্রী ওঠানামা করতে দেখা যায়। তখন চালকরা কৌশলে বাসের গতি কমিয়ে দেন। ফলে ক্রসিংগুলোতে যানজট আরও বেড়ে যায়। এ চিত্র রাজধানীর প্রায় সব এলাকারই।
যানজট নিয়ন্ত্রণে বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এবার রমজানে ‘সহনীয় যানজট’ উপহার দেওয়ার জন্য সড়ক ও ফুটপাত দখল করে কোনো ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য, ইফতারসামগ্রী বেচাকেনা করতে দেওয়া হবে না। রাস্তা দখল করে কোনো হকার বা ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা থাকবে না। এ জন্য রাজধানীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সেবা সংস্থাগুলোকে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ রাখা ও চলমান কাজগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়। রুট পারমিটবিহীন কোনো যানবাহন যাতে চলতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চলবে। সড়কের মোমেন্টাম (গতিবেগ) স্বাভাবিক রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মোতায়েন থাকবে অতিরিক্ত ফোর্স। ট্রাফিক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা মাঠে থাকবেন এসব কার্যক্রম তদারকির জন্য। অথচ বরাবরের মতো ফুটপাত-সড়ক দখল করে দেদার চলছে ইফতারসামগ্রীর বেচাবিক্রি। পাশাপাশি বসছে দোকানপাটও; বরং ফুটপাত-রাস্তার ব্যবসা যেন আরও জমে উঠেছে ঈদ সামনে রেখে। খোঁড়াখুঁড়ির কাজও বন্ধ হয়নি। সেবা সংস্থাগুলো তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমই বহাল রেখেছে। ফলে ‘সহনীয় যানজটে’র দেখা রমজানে মেলেনি।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বলেন, যানজট নিরসনে যে নির্দেশনাবলি দেওয়া হয়েছে, সেগুলো মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: