নিউজ ডেস্ক : লালমনিরহাটের বুড়িমারী এক যুগেরও বেশি সময় আগে সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর কাছে আবদার জানানো হয়েছিল এই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রেলপথে ঢাকায় যাতায়াতে সরাসরি একটি ট্রেনের জন্য।
অবশেষে সেটি চালু হচ্ছে মঙ্গলবার (১২ মার্চ)। তবে সীমান্তবাসীর আফসোস যেন রয়েই গেল। কারণ, ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ নামে নতুন আন্তঃনগর ট্রেনটি যাত্রা শুরু করলেও আপাতত যাবে না বুড়িমারী স্টেশনে; যাতায়াত করবে লালমনিরহাট শহর থেকে। এ অঞ্চলের মানুষ আরেকটি ট্রেন পেলেও বাড়তি কোনো সুবিধা মিলল না।
জানা যায়, ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ আপাতত যাতায়াত করবে লালমনিরহাট-ঢাকা রেলপথে। তবে বুড়িমারীর যাত্রীদের এই গাড়ির সুবিধা দিতে একটি শাটল ট্রেন রাখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ঢাকা-বুড়িমারী পথের যাত্রীদের আনা-নেওয়া করা হবে। সে হিসেবে বুড়িমারী কমিউটার-৭২ ট্রেন ঢাকার যাত্রীদের নিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বুড়িমারী স্টেশন ছাড়বে। সেটি লালমনিরহাট পৌঁছবে রাত ৮টা ২৫ মিনিটে। সেখান থেকে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ১৪টি যাত্রীবাহী বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে বুড়িমারী এক্সপ্রেস। সেটি রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছবে সকাল ৭টার দিকে।
ঢাকা থেকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করবে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে। সেটি লালমনিরহাট স্টেশনে পৌঁছবে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে। সেখান থেকে সীমান্তবর্তী উপজেলাটির যাত্রীদের নিয়ে একটি শাটল ট্রেন ছাড়বে ৬টা ৫০ মিনিটে। সেটি বুড়িমারী স্টেশনে পৌঁছবে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। এভাবে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ঘড়ি ধরে চলাচল করলেও যাদের জন্য এই সেবা তাদের আসা-যাওয়ার পথে অপচয় হবে অন্তত দুই ঘণ্টা। এ ছাড়া বর্তমানে চলাচলরত ‘লালমনি এক্সপ্রেস’-এর সঙ্গে তুলনা করলে বাড়তি কোনো সুবিধাই পাচ্ছে না বুড়িমারীর বাসিন্দারা।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বুড়িমারী থেকে ঢাকা প্রায় ছয়শ কিলোমিটারের দীর্ঘতম রেলপথ দেশের মধ্যে। বুড়িমারী স্টেশনে সার্বিক অবকাঠামোগত সুবিধা এখনও গড়ে ওঠেনি। ট্রেনটির ওয়াশফিট ও সিকলাইন তৈরির কাজ চলছে। তাই আপাতত লালমনিরহাট থেকেই চলাচল করবে বুড়িমারী এক্সপ্রেস। পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সোমবার।
হতাশা প্রকাশ করে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) লালমনিরহাট ইউনিটের সদস্য সহকারী অধ্যাপক এসএম আবু হাসনাত বলেন, ট্রেনটি সরাসরি বুড়িমারী স্টেশনে না যাওয়ায় স্থানীয় যাত্রীসহ ভারত, ভুটান ও নেপাল-সংশ্লিষ্ট পর্যটকদের বেশ অসুবিধা হবে। তাদের বুড়িমারী-ঢাকা রেলপথে যাতায়াতের জন্য দু’বার দুই ট্রেনের টিকিট কাটতে হবে। লাগেজসহ মালপত্র নিয়ে ঝামেলার অন্ত থাকবে না। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন না ছাড়ার পুরোনো সমস্যার কারণে দীর্ঘ সময় অপচয় হবে যাত্রীদের। সঙ্গে খরচ হবে অতিরিক্ত অর্থও। তাই নতুন ট্রেন চালু হলেও বাড়তি কোনো সুবিধা পাওয়া যাবে না বুড়িমারী থেকে ঢাকা যাতায়াতে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: