• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৬ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

জীবন যুদ্ধের মাঠে একাকি শাহনাজ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০২:২১ পিএম
জীবন যুদ্ধের মাঠে একাকি
শাহনাজ পারভীন

ফারজানা মৃদুলা

তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম
তুমি রবে নীরবে...
খুব আপন মনে একাকী রবি ঠাকুরের এই গান যেন
চোখের জলে নিজেকে ভেজায় এই গল্পের নায়িকা মানিকগঞ্জের শাহনাজ পারভীন।
২০২০ এর ১৭ মার্চ জীবনসঙ্গী ইসহাক প্রধান কে হারিয়ে এই হংসমিথুন জোড়া বড্ড একা হয়ে পড়ে। কেননা জীবনে টিকে থাকার লড়াইয়ে ২০১১ থেকে এক সাথে শুরু করেছিলো নিজেদের স্বনির্ভর করার সংগ্রাম।

চলার পথে বহু চড়াই-উতরাই পাড় করেছে।
কিন্তু ভরসার হাতটি ছিলো শাহনাজ কে শক্ত করে ধরতে।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই মানুষটি হারিয়ে গেলো জীবন যুদ্ধের মাঠে আজ একাকি শাহনাজ।
মরহুম মুজিবুর রহমান ও নীলিমা রহমান দম্পতির ৫ সন্তানের মাঝে ২য় এই  জীবন যোদ্ধা শাহনাজ। বাবার সরকারি চাকুরীর সুবাদে ছোটবেলাটা কেটেছে প্রকৃতির কাছাকাছি সিলেটের বিভিন্ন জেলায়।

১৯৯৮ সালে নতুন সংসার জীবন শুরু করে মানিকগঞ্জ থেকেই। এরপর যখন একটা সময় বোঝা গেলো একজনের আয়ে সংসার চালানো দায় সাহসী ভূমিকা নিয়ে নিজেই ছায়ার মত জীবনসাথীর সাথে সংসারের হাল ধরলো ২০১১ সাল থেকে।

হংসমিথুন এই জোড়ার শুরুর দিকে কোন লোকবল ছিলোনা। তবে মন্দ ছিলো না সেই সময়টা। তাদের উদ্যোগ এর নামকরন করা হয় বর্নালী প্রিন্টার্স । 
শাহনাজ বরাবরই গোলাপী রং যেমন ভালোবাসে, তেমনি গোলাপ ও তার পছন্দের শীর্ষ তালিকায়। সেই গোলাপের সুবাস ছড়িয়ে যেন চলছিলো দিনগুলো। 
স্বামীর কাছেই তার হাতেঘড়ি নিয়ে প্রিন্টার্স জগতে নামে কোমড় বেঁধে।

সেই সময়টাতে এত আধুনিকতার ছোঁয়া না থাকায়, সারারাত হাতেই স্কিনপ্রিন্ট করে ২ জনে ভিজিটিং কার্ড তৈরি করতো। পরে ১জন এর পর ২ জন, এমন করে আস্তে আস্তে তাদের বর্নালী প্রিন্টার্স পরিবারে কর্মীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে সব তছনছ! ২০২০ এ পাশে ভরসা করে চলার মানুষটি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন। আর সব স্মৃতির বাহক করে রেখে গেলেন শাহনাজকে।
সেই সময় সন্তান গুলোও ছোট একদম ভেঙে পড়েছিলো । কিন্তু তার সাথে যে আছে উপাধি “সাহসী যোদ্ধা” তাই ঘুরে দাড়ালো। একাকী সব সামলাতে হিমশিম খেতে হলেও হাল ছাড়েনি শাহনাজ।

আচমকা ইউ এন ডি পি তার সংগ্রামী জীবনকে সম্মান জানিয়ে অনুদান দেন এবং সেই অনুদান তার চলার পথকে বেশ গুছিয়ে নিতে সহযোগি ভূমিকা পালন করে।
২ কন্যা ও ১ পুত্রকে ঘিরে হাজারো স্বপ্ন। তাদের বাবার ইচ্ছে পূরনের তাগিদে কষ্টগুলোকে পুজি করে ছুটে চলছে আপন গতিতে। আজ তার বর্নালিতে মাঠ পর্যায়ে ৫০ জন এবং কারখানায় ১০ জন কর্মী শুধু অফিসরুমের পাশের চেয়ারে নেই ভালোবেসে কাঁধে হাত রাখার মানুষটি ।

আগামীতে বর্ণালীকে তৈরি করতে চায় একটি ব্রান্ড এবং নিজের মাধ্যমে চায় অসহায় মানুষ কে স্বাবলম্বী করতে। 
"সুন্দর পথ দেখানো" শাননাজ পারভীন তার নামের এই অর্থ টি প্রমানিত করতে চায় এবং তার ভালো কর্ম দিয়ে সকলের মাঝে বেঁচে থাকতে চায়।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image