• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে সম্ভাব্য একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১৬ এএম
সুনামগঞ্জ-৫ আসনে
সম্ভাব্য একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী

ছাতক প্রতিনিধি: আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সুনামগঞ্জ -৫ আসনে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ইতোমধ্যেই দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রার্থিতা নিশ্চিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন প্রার্থীরা। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে কাজে লাগিয়ে এ আসনে জয় পেতে মরিয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বিএনপিও।

ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৫ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক দলীয় পাঁচ প্রার্থী। নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপিতেও প্রার্থী তালিকা দীর্ঘ হতে পারে। জাপা থেকেও প্রার্থী হতে ইচ্ছুক একাধিক প্রার্থী। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। ২০০৮ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন লাভ করে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

ফলে দীর্ঘ সময়ে এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের একটি শক্ত ঘাঁটি তৈরি হয়েছে। একই সাথে উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করার মতো। একই সাথে দলীয় কোন্দলও বেড়েছে বহুগুন। এই আসনে এ যাবত পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন হয়েছে ১১টি। নির্বাচনে পাঁচবার আওয়ামী লীগ, দুইবার জাতীয় পার্টি, দুইবার স্বতন্ত্র দুবার এবং বিএনপি ও জাসদ একবার করে বিজয়ী হয়।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে প্রথমবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল মজিদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কলিম উদ্দিন মিলন, ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মুহিবুর রহমান মানিক এবং ২০০১ সালে বিএনপির কলিম উদ্দিন মিলন এমপি হন। ২০০৮ সালের ভোটে মুহিবুর রহমান মানিক আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। এরপর থেকে এই প্রার্থীই নির্বাচিত হয়ে আসছেন বারবার। এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তাছাড়া দলীয় মনোনয়ন চান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবারও বেশ শক্তভাবে মাঠে নেমেছেন তিনি। এই দুই নেতা ছাড়াও আছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা আয়ুব করম আলী ও দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ আহমদ তারেক।

এই আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক অনেকেই। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপির অবস্থান এখনও স্পষ্ট না হলেও ঘরে বসে নেই প্রার্থীরা। কৌশলে গণসংযোগ করছেন প্রত্যেকেই। এর মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মুনসিফ আলী।

জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চান জেলার সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আবদুল মজিদের ছেলে নাজমুল হুদা হিমেল। তাছাড়া দলের মনোনয়ন চান, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, যুক্তরাজ্য জাতীয় পার্টি শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় পার্টি লন্ডন মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক, লন্ডন টাওয়ার হেমলেন্টসের সাবেক কাউন্সিলার রুহুল আমিন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ছাতক উপজেলা সভাপতি আবুল হাসান, ও দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী।

ভোটারদের তথ্যমতে, এই আসনে মুহিবুর রহমান মানিক ব্যতিত শক্তিশালী প্রার্থী নেই আওয়ামী লীগের। শামীম চৌধুরীর জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ভোটারদের। তিনি এর আগে ছাতক উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান পদে হেরে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরীর কাছে। তবে শামীম চৌধুরীর জায়গায় আবুল কালাম চৌধুরী প্রার্থী হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে উঠবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।

ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে এই আসনে মুহিবুর রহমান মানিকের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সিদ্বান্ত এখন ভোটারদের। তাঁরা উন্নয়ন না কি দু:শাসন চান। উন্নয়নকামী মানুষ নি:সন্দেহে এই আসনে তাদের কাণ্ডারী হিসেবে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সাংসদকেই বেছে নিবে।

দোয়ারাবাজার উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক কৃপাসিন্দু রায় ভানু বলেন, দৃশ্যমান এতো এতো উন্নয়ন দেখার পরও যদি কারো ঘুম না ভাঙে, তাহলে তাকে আর কখনো জাগানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অকৃপন হাতের ছোঁয়ায় সারাদেশ যেভাবে পাল্টে যাচ্ছে, পশ্চাৎপদ দোয়ারাবাজার উপজেলাও ঠিক তেমনি আজ উন্নয়নের ছোঁয়া পেতে সমর্থ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিবুর রহমান মানিক বলেন,‘ ‘জনগণের রায় নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। ভোট তো দেবে জনগন। সুতরাং উন্নয়ন কি হয়েছে আমার প্রাণপ্রিয় ভোটাররাই তা নির্ণয় করবেন।’তিনি বলেন, জনতার কাতারে আছি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়রম্যান থেকে। তারপর জনগণের ভালোবাসার তাগিদ থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ। এ যাবত পর্যন্ত দলীয়ভাবে ছয়বার মনোনয়ন পেয়েছি। ছাতক-দোয়াবাজার উপজেলার যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্পোন্নয়ন, বিদ্যুতায়ন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এখন লক্ষ শুধু একটাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট জনপদ। এরজন্য প্রয়োজন মানবিক মূল্যরোধ সম্পন্ন মানুষ। যারা এগিয়ে আসবে উন্নয়নের পক্ষে। একই সাথে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির নাগপাশ ছিহ্ন করে মুক্ত রাখতে পারবে নিজেদের।

ছাতক পৌরসভাসহ দুই উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন নিয়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বিভক্তি রয়েছে বিএনপিতেও। শাসক দলের নেতাদের চোখ রাঙানি ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের নানাবিধ চাপের মধ্যে এই বিভক্তি বেশ চাঙা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও পালিত হয় আলাদাভাবে। স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়েছে। নির্বাচনের আগে কোন্দল নিরসনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান তৃণমূলের। তারা বলছেন, নতুন প্রার্থী দিলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত।

জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, এই আসনে বিএনপি আমলের তৈরি রাস্তাগুলোও মেরামত করা হয়নি। যা হয়েছে সেখানেও লুটপাট করেছে সরকারের লুটেরা বাহিনী। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে দলের কোন্দল নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এখন কোনো কোন্দল নেই। আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন চাইব।

বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগ, প্রচারের মাধ্যমে দলকে সংগঠিত করে যাচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি জানান, মানুষ যেমন সরকারের পরিবর্তন চায়, তেমনি বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তন চায়। পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে আছি।

জাপা নেতা রুহুল আমিন জানান, আসনটি জাতীয় পার্টির ঘাঁটি। আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়ার দাবি আমাদের। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করছি। স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছে। মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image