• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবরে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে পর্যটক ভাটা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২৭ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০৫ পিএম
পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবরে কিশোরগঞ্জের
হাওরাঞ্চলে পর্যটক ভাটা

বিজয়কর রতন, মিঠামইন প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ:  কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের সৌন্দর্য দেখতে এসে পানিতে ডুবে পর্যটক নিহত হচ্ছে প্রায়ই। গণমাধ্যমে এসব খবর দেখে, ভয়ে এ অঞ্চলে আসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। এতে করে হুমকির মুখে হাওর এলাকার সম্ভাব্য পর্যটন খাত। পর্যটকদের অভিযোগ, হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের নেই কোন কার্যকর পদক্ষেপ।

গত ২৭ শে আগষ্ট শনিবার পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী চলতি বর্ষা মৌসমে আড়াই মাসে ২২ জনের অধিক পর্যটকের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলার এক হাজার চার শত সত্তর বর্গকিলোমিটারের হাওরাঞ্চলে বর্ষায় থাকে থই থই পানি। শতভাগ হাওর অধ্যুষিত ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলাকে পানির বুক চিরে সংযুক্ত করেছে দৃষ্টি নন্দন অল ওয়েদার সড়ক। প্রকৃতির এমন নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে গত কয়েক বছর ধরে সারাদেশ থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।

এমন সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এসে প্রায়ই পানিতে ডুবে নিখোঁজ হচ্ছেন অনেক পর্যটক। উত্তাল এ পানিতে নিখোঁজের পর স্বজনরা অপেক্ষা করেন লাশ উদ্ধারের। এটাই যেন নিয়ম। চলতি মৌসুমে আড়াই মাসে পানিতে ডুবে নিখোঁজের পর ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বাবা-ছেলে, শিশু, কলেজ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ নেতাসহ রয়েছেন চাকুরিজীবীও। মৌসুমের শুরুতেই এসব মৃত্যুর খবরে এখন প্রায় পর্যটক শুন্য কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা। এতে করে কষ্টে দিনপাত করছেন নৌকার মাঝিরা।

জেলার হাওরাঞ্চলের প্রধান কয়েকটি প্রবেশদ্বার হলো করিমগঞ্জ উপজেলার চামড়া বন্দর, বালিখলা, বাজিতপুর উপজেলার পাটুলীঘাট এবং নিকলী উপজেলার বেড়ীবাঁধ। এসব প্রবেশদ্বারে সারি সারি ট্রলার নিয়ে পর্যটকদের অপেক্ষা করেন মাঝিরা। ভাড়ার দরদাম করে ট্রলার নিয়ে হাওরের দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশিতে ভেসে বেড়ান পর্যটকরা। নিকলী বেড়িবাঁধের ট্রলারের মাঝি আবদুল বাতেন বলেন, অন্যান্য বছর প্রচুর পর্যটক আসতেন, এতেকরে ট্রলারের চাহিদা মিটানো সম্ভব হতোনা। কিন্তু চলতি বছর শত শত ট্রলার নিয়ে বসে আছি আমরা, পর্যটক নেই। এ জন্য পানিতে ডুবে পর্যটকদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রভাব ফেলেছে বলে জানান তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাওরের ঝুঁকিপুর্ন স্থানগুলো নির্নয়ে প্রশাসনের নেই কোন কার্যকর উদ্যোগ। লাইফ জ্যাকেট পড়ে নৌকায় চড়ার কথা থাকলেও মানা হচ্ছেনা কোন কিছু।

এদিকে, অঘোষিত এ পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের জন্য প্রশাসনিক সকল সুযোগ সুবিধা চান পর্যটকরা। নরসিংদী থেকে কিশোরগঞ্জের হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটক তুহিন আহমেদ বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু কোথাও প্রশাসনের কোন নজরদারি দেখলামনা। কিংবা কোথাও কোন সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড-বিলবোর্ড লাগানো নেই।

এ জন্য কোথায় ঝুঁকিপুর্ন আমরা জানতে পারছিনা। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম চলতি বছর পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি স্বীকার করে বলেন, হাওর ভ্রমণের জন্য যে নৌকাগুলো ব্যবহৃত হয়, সেগুলোতেও মোটিভেশনাল কার্যক্রম করা হবে, পর্যটকরা যাতে যত্রতত্র পানিতে না নামেন সে বিষয়ে জোর তৎপরতা চালানো হবে। এবং যেসকল যায়গা থেকে ট্রলার ছাড়ে সেখানে সাইনবোর্ড-বিলবোর্ড লাগানো হবে।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারি বলেন, গত দুই বছরে হাওরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। যা চলতি মৌসুমের আড়াই মাসেই রেকর্ড ছুঁয়েছে। আমরা খবর পেয়ে ডুবুরি দলে পাঠাই। এছাড়া এলাকাবাসীও অনেক মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image