ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বোরো রোপণে চলছে কৃষকের ব্যস্ততা। জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ সবকিছু মিলে একেবারে মহাব্যস্ত এখন কৃষবেরা। তীব্র শীতে কিছু কিছু বোবোর বীজতলা ঝুঁকিতে থাকায় চিন্তিত কৃষকেরা। তবে শীতের তীব্রতার কারণে ধান রোপণ কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। উপজেলায় বেশিরভাগ কৃষক এরই মধ্যে শেষ করেছে জমি হালচাষ।
কৃষকরা জানান, পৌষ মাসের শেষের দিকে বোরো ধান রোপণের কাজ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবার মৌসুমের শুরুতে প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে মাঘের ১০ দিন গেলেও শীত ও ঠান্ডায় কাদাপানিতে নেমে ধান রোপণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সে কারণে চলতি মৌসুমে বোরো ধান রোপণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে এখন পুরো দমে চলছে চারা রোপণের কাজ। প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলার কিছু বীজতলাও সাদা হয়ে আছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী রয়েছে। প্রদর্শনী প্রতি কৃষককে প্রণোদনা হিসাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে বোরো ধানের উফসি ও হাইব্রীড জাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বোরো রোপণ চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে জমির কাদাপানিতে নেমে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধানের চারা রোপণ করছেন চাষিরা। কেউ চারা রোপণের জন্য জমি প্রস্তুতে ব্যস্ত। আবার কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন। কৃষকরা জানান, এবার বীজ, হাল, সারসহ সব কিছুরই দাম বেশি। ২ বিঘা জমিতে ধান লাগাতে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্বধনিরাম শাহবাজার গ্রামের আদর্শ কৃষক শাহজান আলী জানান, এবারে প্রায় ২২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন শুরু করেছি। সবকিছুর বাড়তি দামের কারণে ধান চাষে লাভ খুব কম হয়। আর চাষ না করে জমি ফেলে রাখারও উপায় নাই।
পশ্চিম ধনীরাম গেটের বাজার গ্রামের বিপ্লব মিয়া বলেন, আমি গতবার নয় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। খরচ বেশি হওয়ায় এবার দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করলাম। বাকি জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বর্গাচাষিদের ক্ষেত্রে খরচ হয় ১৪ থেকে ১৮ হাজার টাকা। ধানের দাম আর একটু বেশি হলে ধান চাষে লাভবান হওয়া যেত।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, এবারে ফুলবাড়ী উপজেলায় বোরো উপসী ও হাইব্রীড ধান চাষের লক্ষমাত্রা ১০ হাজার ১ শত ৯০ হেক্টর। ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ফুলবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭ শত ২০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিনামূল্যে প্রণোদনার মাধ্যমে দিয়েছি। বোরো ধান চাষে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: