
নিউজ ডেস্ক : আগুনে নিঃস্ব হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার দোকানের কয়েক হাজার মালিক ও কর্মচারী। সব হারিয়ে নিঃস্ব ব্যবসায়ীদের আর্তনাদে ভারি রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা। রাতভর অবশিষ্ট মালামাল সরানোর চেষ্টা করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। পুড়ে যাওয়া মালামালের মধ্যেই অনেকে খুঁজে ফেরেন বেঁচে থাকার আশা।
স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়েছে। রক্ত পানি করা শ্রম নিঃশেষ করে দিয়েছে আগুন। আর কটা দিন পরই ঈদ। ক্ষতিগ্রস্তদের চোখেমুখে এখন শুধু হাহাকার।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) মধ্যরাতে সুযোগ পেয়ে নিউমার্কেটের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় প্রবেশ করেন ব্যবসায়ীরা। পুড়ে যাওয়া মালামালের মধ্যে অনেকেই খুঁজে ফেরেন বেঁচে থাকার আশা। রাতভর চলে অবশিষ্ট মালামাল নিরাপদ গন্তব্যে নেয়ার কাজ। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ছিলেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
তারা বলছেন, দোকানের শাটার খোলার পর আগুন দেখা যাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে কাজ করাও কঠিন হয়ে ওঠে। ঝুলানো মালামাল পুড়ে গেছে। কিন্তু বস্তায় থাকা কিছু মালামাল রক্ষা পেয়েছে। সেগুলো এনে কিছু ভালো আছে কিনা, তা বাছাই করা হবে।
কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, কিছুই পাইনি। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঈদের মৌসুমের জন্য আমাদের সারা বছরের অপেক্ষা থাকে। এ জন্য মায়ের সোনা বন্ধক রেখেছি; ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছি। কিন্তু ক্যাশে থাকা নগদ সব টাকাও পুড়ে শেষ।
মধ্যরাতেও কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন নিউমার্কেটের চারপাশ। খুঁজে খুঁজে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে থাকেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। প্রচণ্ড গরমে কাজ করতে বেগ পেতে হয় তাদের।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মার্কেটটিতে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তুষের আগুনের মতো কাপড়গুলো জ্বলছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভালো বিক্রির আশায় শনিবার যখন সেহরি খেয়ে নিশ্চিন্ত ঘুমে ব্যবসায়ীরা ঠিক তখনই ঘুমন্ত নগরীতে হানা দেয় আগুন। ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে আগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিট যুক্ত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আরও কাজ করে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী।
এরপর সাড়ে ৩ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও মার্কেটের ভেতরে কোথাও কোথাও আগুন ছিল। আগুন পুরোপুরি নেভাতে শনিবার দিনগত রাতেও কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: