• ঢাকা
  • রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

তিস্তার বুকে জেগে উঠা বালুচরে ভুট্টা চাষ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৩০ পিএম
তিস্তার বুকে জেগে উঠা
বালুচরে ভুট্টা চাষ

জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নদীবেষ্টিতে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য বালুচর। আর এসব নদীর ধু ধু বালুচরে কৃষকরা ভুট্টা চাষ করে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন। চরাঞ্চলের কৃষকদের কাছে ভুট্টা যেন গুপ্তধন। স্বপ্নের এই ফসল বুনতে শুরু করেছেন কৃষকরা।সোমবার  নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী, কৈমারীর তিস্তার চরসহ বিভিন্ন নদীর চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকদের ভুট্টা রোপণের দৃশ্য। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, জলঢাকার বুক চিরে বয়ে গেছে তিস্তা, বুড়ি তিস্তা, ইছামতী, যমুনেশ্বরী, চারাল কাটা, চিকলিসহ বিভিন্ন নদী। আর এসব নদীর বুকে জেগে উঠেছে ধু ধু বালু চর। এ চরগুলোতে কৃষকরা কাক ডাকা ভোর থেকে লাঙল, কোদাল, বালতি, সুতলি (দরি) সহ বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে রওনা হচ্ছেন চরের জমিতে। 

দিনের আলোর সময় কমে যাওয়ায় অর্থাৎ স্থানীয় ভাষায় দিন ছোট হওয়ায় খুব সকাল থেকে ভুট্টা বীজ বপন করেছেন তারা। এসব চরে বসবাস করে কয়েক হাজার মানুষ। আর এসব মানুষ বিভিন্ন ফসলের উপর নির্ভরশীল। তাই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এ বছরও চাষ করছে সাহস্রাধিক হেক্টর জমিতে ভুট্টা।

ডাউয়াবাড়ীর তিস্তার চরাঞ্চল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দু’জন কৃষক জমিতে ছোট লাঙল টানছেন। আর পাঁচ-ছয়জন ভুট্টার বীজ বপন করছেন। এক একর জমিতে ভুট্টার বীজ বপন করতে ছয়-সাতজন মজুরই যথেষ্ট বলে তারা জানান। বর্তমান সময়ে জমি প্রস্তুতসহ বীজ বপনে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সাধারণত ডিসেম্বরে ভুট্টা বীজ বপন করা হলেও এবার অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে ভুট্টার বীজ বপন করতে শুরু করেছেন এই এলাকার কৃষকেরা। ডাউয়াবারীর চরের কৃষক আলম বলেন, এবছর ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগাচ্ছি। ভুট্টা আবাদের তেমন কোন খরচ হয় না। 

শুধু বীজ, শ্রমিক ও নদী থেকে পানি দেওয়ার ব্যয়। তাই কমে খরচে অধিক লাভ করা সম্ভব ভুট্টা ফসল থেকে।বালাগ্রাম এলাকার হাবিবুর রহমান নামে এক কৃষক জানান, ৯০ শতক জমিতে ভুট্টা চাষে খরচ হয আট হাজার হতে দশ হাজার টাকা। এতে ৭০ থেকে ১১০ মণ ভুট্টা পাওয়া যায়। তবে বাজারে দাম বেশি হলে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জলঢাকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় দুই হাজার ২ শত ৪৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।গোলমুন্ডা তিস্তার চর এলাকার কৃষক শাহ আলম জানান, এবার চার একর জমিতে আগাম ভুট্টা লাগিয়েছেন। আগাম ভুট্টা চাষে রোগ-বালাই কম হয়। আগাম ভুট্টার বিশেষ চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাওয়া যায়। আবহাওয়া ঠিক থাকলে অন্য ভুট্টার চেয়ে অন্তত দু’মাস আগে এই ভুট্টা ঘরে উঠবে। শৌলমারী হাজী পাড়া গ্রামের কৃষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার অনেক আগে ভুট্টা চাষ করেছি। 

আগাম জাতের ধান কাটার পর মাটি প্রস্তুত করে সেই জমিতে আগাম ভুট্টা চাষ করছি। এখনো আমন ধান কাটা শেষ প্রান্ত হওয়ায় কিছুটা সস্তায় শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে। সবদিক বিবেচনা করে আগাম ভুট্টা চাষ করছি। কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে এলাকার কৃষকদের।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ  বলেন, ভুট্টা রবি মৌসুমের ফসল। এই মৌসুমে ভুট্টা দু’বার চাষ করা যায়। আগাম পর্যায়ে ১৫ অক্টোবর হতে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে নভেম্বরের শেষ দিক হতে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত। 

অন্য বছরের তুলনায় এবার আগাম ভুট্টা বেশি চাষ হচ্ছে। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় উপজেলায় ভুট্টার চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ বছর এই উপজেলায় দুই হাজার ২শত ৪৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কে এন

আরো পড়ুন

banner image
banner image