জাকারিয়া মিঞা, ফুলবাড়ী প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে এবছর পাটের ফলন ও দাম ভাল হওয়ায় পাটচাষীদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। যদিও এবারে খরার কারণে জমিতে বীজ বপন ও পাট জাগ দেয়ার সময় চিন্তায় পড়তে হয়েছিল কৃষকদের। অবশেষে সব প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে চাষাবাদে জয় হয়েছে কৃষকের। এবারে পাটের ফলন ও দামে খুসি তারা। এছাড়াও পাটকাঠির ভালো দাম ও চাহিদা থাকায় বাড়তি লাভের আশা করছেন চাষীরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পাট চাষীদের কেউ পাট ধোয়া কেউবা পাট শুকানোর কাজে ব্যস্ত। কেউ কেউ পাটকাঠি শুকাচ্ছেন। অনেকেই আবার বাড়িতে পাইকার ডেকে পাট বিক্রি করছেন। পাট চাষাবাদের বিষয়ে সাথে কথা হলে পাটের ফলন ও দামে স্বস্তির কথাই জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের গেটের বাজার এলাকার কৃষক আবু মুসা বলেন, আমি এবারে এক বিঘা জমিতে পাট চাষাবাদ করেছি। পাট চাষাবাদের জন্য বিনামূল্যে সরকারি বীজ ও সার পেয়েছিলাম। জমি হাল চাষ, নিড়ানি, পাট কাটা ও ধুতে সব মিলিয়ে আমার প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে পাটের ফলন হয়েছে ১০ মণ। আজকে পাইকার ডেকে ২৫'শ টাকা মণ দরে ১০ মণ পাট ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করলাম। এক বিঘা জমিতে পাট চাষাবাদ করে শুধু পাটেই খরচ বাদে ১৮ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। বাড়িতে যে পাটকাটি আছে তা বিক্রি করে আরো ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা পাব। এবারে পাটের ফলন ও দামে আমি খুব খুশি।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাগদহ এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক ও এমদাদুল হক সহ উপজেলার অনেক পাটচাষি জানান, পাট চাষাবাদ করে একই জমিতে তারা রোপা আমন চাষ করছেন। পাট আবাদ করে ভালো ফলন ও দামে তারা খুশি। এখন পাট বিক্রির টাকা দিয়ে তারা আমন চাষের খরচের জোগান দিচ্ছেন।
উপজেলা পাট অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা বেনজির আহমেদ বলেন, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আঁশ পাট উৎপাদনকারী প্রকল্পভূক্ত উপজেলার ৩ হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাটবীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও পাটখেত পরিচর্যায় কৃষকদের দক্ষ করে তুলতে কৃষক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জানান, উপজেলায় এবারে ৬১০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা পাট চাষাবাদ করেছেন। কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৮'শ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাটবীজ বিতরণ করা হয়েছে। পাট চাষাবাদে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। পাটের ফলন ও দামে পাটচাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। আগামী মৌসুমে উপজেলায় পাটের আবাদ বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: