• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

গৌরীপুরে ৫সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তি অনিশ্চিত


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ০৪ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০:৪৭ পিএম
গৌরীপুরে ৫সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তি অনিশ্চিত
গৌরীপুর

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রায় ৫সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ৫ম শ্রেণীর সমাপনি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েও ৫হাজার ৫১জন শিক্ষার্থী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভর্তি হতে নাপারা শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ছুটছেন এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে। অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় একমাস যাবৎ ক্লাস শুরু হলেও এ সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার তালিকা দীর্ঘ হলেও গ্রামাঞ্চলে ও মাদরাসাগুলোতে রয়েছে আসন ফাঁকা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ২০২৩শিক্ষাবর্ষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছে ৫হাজার ৮৯০জন, কিন্ডারগার্টেন ও এবতেদায়ী মাদরাসায় ৩হাজার ২৮৬জন শিক্ষার্থী। ২০২৪সনে মোট ৯হাজার ১৭৬জন শিক্ষার্থী উচ্চ বিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ৪০টিস্কুল এবং ১৬টি মাদরাসার ৭৫টি শাখায় ৫৫জন করে ৪হাজার ১২৫জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ বছর বিদ্যালয়গুলো থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বইয়ের চাহিদা ছিলো ৫হাজার ৯শ জনের। যা ২০২৩সনে ছিলো ৬হাজার ২শ জনের। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান এ জানান, প্রতিবছর ১০শতাংশ থেকে ১৫শতাংশ শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে বইয়ের চাহিদা দেয়া হতো। এবছর প্রতি শাখায় ৫৫জনের বেশি ভর্তির সুযোগ নেই। তাই বইয়ের চাহিদা কম দিতে হয়েছে। 

গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, এ বিদ্যালয়ে ২০২৪সনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করে ৩৪৯জন ছাত্রী। লটারির মাধ্যমে ৩টি শাখায় ১৬৫জনকে ভর্তি করেছেন। আসনের অনুমতি পেলে ভর্তির জন্য অপেক্ষায় রেখেছেন আরও ১৬৫জনকে। এ বিদ্যালয়ে ২০২৩সনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল ২৭৩জন। ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরোত্তম রায় জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করেছিলো ১৯৬জন। তাদের মধ্যে ১৬৫জনকে লটারীর মাধ্যমে ভর্তি করা হয়েছে। গতবছর ভর্তি হয়েছিলো ২২৮জন। এ বছরের অপেক্ষাকালীন তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছি। নূরুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক জানান, এ বছর ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলো ৪৫৫জন। ৩টি শাখায় ৫৫জন করে ভর্তি হয়েছে। ভর্তির জন্য অপেক্ষা তালিকায় আরও ১৬৫জনকে রাখা হয়েছে। ক্লাস শুরু হলেও তাদের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসে নাই। ধুরুয়া নাজিম উদ্দিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব উদ্দিন জানান, একটি শাখায় ৫৫জন ভর্তি হয়েছে আরও ১০৩জন অপেক্ষমান তালিকায় আছে।

অপরদিকে মাদরাসারগুলোর মধ্যে ইসলামাবাদ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. রুকুন উদ্দিন জানান, ৫৫জন ভর্তি হয়েছে, ভর্তিচ্ছুক তালিকা রয়েছে ৩৫জন। শাখা খোলার জন্য আবেদন করেছেন। পাছার সামাদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ৫৫জনের আসনের মধ্যে ২০জন ভর্তি হয়েছে। ৩৫জনের আসন এখনও শূণ্য। হাসনপুর দাখিল মাদরাসার সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ৫৫জনের মধ্যে ৪০জন ভর্তি হয়েছে। ১০জনের আসন শূণ্য আছে। নামাপাড়া কেরামতিয়া দাখিলা মাদরাসার সুপার ছৈয়দ শহিদউলল্লাহ জানান, ৫৫জনের মধ্যে ৩৫জন ভর্তি হয়েছে। ২০জনের আসন শূন্য। শিবপুর এলইউ আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. মফিজ উদ্দিন জানান, মাদরাসার শাখা এখনো সুস্পষ্ট নয়। যতজন আছে, সবাইকে বই দিয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। অনুরূপ অবস্থায় চলছে আরও ৬টি মাদরাসা। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ জানান, শিক্ষার্থী আসছে, বই দিয়েছি, ক্লাস নিচ্ছি। পরবর্তীতে সমস্যা হলে সমাধানের পথ খুঁজবো। তবে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। 

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে লটারীর মাধ্যমে গ্রামের শিক্ষার্থীরাও শহরের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরযূবালা, জাগরণী, শেখ লেবু স্মৃতিসহ স্বনামধন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মেধাতালিকার ১ থেকে ২০জনের ক্রমিকে থাকা অর্ধেক শিক্ষার্থী কোথাও ভর্তি হতে পারে নাই। ইসলামাবাদ এলাকাবার মো. মাসুদ মিয়া জানান, তার পুত্র সন্তান পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শহরের সবগুলো স্কুলে আবেদন করেও লটারীতে সুযোগ পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম জানান, শিক্ষার্থীদের ভর্তি সমস্যার বিষয়ে আমরা অবহিত আছি। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শাখা খোলার আবেদন উধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।   

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক আমরা কাজ করছি। প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের আবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে উধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image