• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বিশ্বে চারজনে একজন টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ০৭ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৩৬ পিএম
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবজনিত কারণে
স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট

নিউজ ডেস্ক: ওয়াটারএইড এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিশ্বে প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজন টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন, প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ এবং এ রোগ (যেমন কলেরা) প্রতিরোধের মধ্যে সংযোগের বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ রোগগুলো কীভাবে বিস্তার লাভ করছে তাও এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবজনিত কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠের পাঁচ মিটারেরও কম উচ্চতায় রয়েছে, যা এ অঞ্চলগুলোকে অতিমাত্রায় বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। খরা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও সাইক্লোন সুপেয় পানির প্রাপ্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্যানিটেশন ও ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি ইনডেক্স র্যাংকিংয়ে ১৮১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৬তম। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশটির জনসংখ্যার ৪৮ শতাংশের মৌলিক স্যানিটেশন সুবিধা রয়েছে। অন্যদিকে দেশটির জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ সীমিত পরিসরে ও অনুন্নত স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় রয়েছে।

বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ৪৫ শতাংশ নিরাপদ ব্যবস্থাপনায় স্যানিটেশনের ওপর নির্ভর করতে পারে। ২০০ কোটি মানুষের প্রাইভেট টয়লেটপ্রাপ্তির সুবিধা নেই এবং ৬০ কোটিরও অধিক মানুষের বিকল্প টয়লেটের ব্যবস্থা নেই বলে তাদের উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করতে হয়।

স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের অভাবে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের কারণে ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত হয় এবং নদী কিংবা লেকের পানি দূষণের অন্যতম কারণও মানুষের মল। মানুষ রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কিংবা পানের জন্য এ উত্সগুলোর ওপরই নির্ভর করে। শিশুরা মাটিতে খেলার মাধ্যমে এসব সংক্রামক জীবাণুতে আক্রান্ত হয়। তাই মানুষের মলের কারণে সৃষ্ট দূষণের ফলে পুরো কমিউনিটি ডায়রিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোয় অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন কমিউনিটিগুলোকে সংক্রামক রোগের মূল কেন্দ্রস্থলে পরিণত করে। ১০টি স্বাস্থ্য সেবাদাতা কেন্দ্রের একটিতে স্যানিটেশনের বিষয়টি নেই। বৈশ্বিকভাবে ১৮০ কোটি মানুষের স্থানীয় কমিউনিটিতে নিরাপদ পানিপ্রাপ্তির সুবিধা নেই।

নিরাপদ পানি, উপযুক্ত টয়লেট ও হাইজিন সুবিধার অভাবে পাঁচদিনেরও কম সময়ে ৮০০ শিশু মৃত্যুবরণ করছে এবং প্রতি বছর মোট ৮ লাখ ২৯ হাজার মানুষ মারা যায়। বর্তমানে স্যানিটেশন খাতের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বন্যা, শক্তিশালী সাইক্লোন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, দীর্ঘমেয়াদি খরার মতো বিষয়গুলো স্যানিটেশন খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এ খাতকে দুর্বল করে ফেলছে এবং ঝুঁকিতে থাকা কমিউনিটির বাসিন্দাদের অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতি বছর (২০৩০ ও ২০৫০ সালের মধ্যে) অতিরিক্ত ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এ মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন।

এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক কমিউনিটির প্রতি স্যানিটেশন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানাচ্ছে ওয়াটারএইড। নিরাপদ, বিশ্বস্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন সেবাই সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দূর করতে পারে। ওয়াটারএইডের ইউকে চিফ এক্সিকিউটিভ টিম ওয়েইনরাইট বলেন, প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, স্যানিটেশন সংকটকে আরো তীব্র করে তুলবে জলবায়ু পরিবর্তন। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় টয়লেট ও স্যানিটেশন খাতের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যা লাখো মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, স্যানিটেশন ও হাইজিন সচেতনতার অভাবে অনেক মানুষ কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোয় এ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। সাইক্লোন ও বন্যার পানি নাজুক ল্যাট্রিনগুলোর ক্ষতিসাধন করে, যা বাসিন্দাদের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image