• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৭ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২০ ফেরুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৫৫ পিএম
ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার
ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার

রোবেল মাহমুদ, (গফরগাঁও) ময়মনসিংহ  : ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার ১৯১৯ সনের ১০ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের পাঁচুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবার নাম হাছেন আলী ও মায়ের নাম সাফাতুন নেছা। স্থানীয়  কৃষ্ণ বাজার ধোপাঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। কিছুদিন বাবার কৃষি কাজে সাহায্য করেন। পনের বছর বয়সে তিনি কাজের সন্ধানে নারায়গঞ্জ চলে আসেন। 

এখানে এক ইংরেজ নাবিকের সাথে আব্দুল জব্বার রেঙ্গুন শহরে (বতর্মান মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন) এসে জাহাজে কাজ শুরু করেন। একটানা বার বছর আব্দুল জব্বার রেঙ্গুনে কাজ করে ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারনে গ্রামে ফিরে আসেন। সেই সময় গ্রামের যুবকদের নিয়ে একটি গ্রাম ডিফেন্স পার্টি গঠন করে জন কল্যাণমুলক কাজে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে আনসার ট্রেনিং নিয়ে নিজ গ্রামে আনসার কমান্ডার হিসেবে কাজ করেন।

১৯৪৯ সালে আব্দুল জব্বার বন্ধুর বোন আমেনা খাতুনকে বিয়ে করে সংসারি হন। তাদের একমাত্র সন্তান নুরুল ইসলাম বাদলের জন্ম হয় ১৯৫০ সনে। তিনি বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে কর্ম জীবন শেষ করে ঢাকার তেজকুনি পাড়া বসবাস করতেন। নুরুল ইসলাম বাদল ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর ৭৩ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। নুরুল ইসলাম বাদল মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর সৈনিক।

১৯৫২ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি আব্দুল জব্বার ক্যান্সার আক্রান্ত শাশুড়ীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে  ভর্তি করান। সে সময় ঢাকা মেডিক্যালের বাইরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে সোচ্চার ছাত্র-জনতার শ্লোগানে  মুখরিত ঢাকার রাজপথ। একুশে ফেব্রæয়ারী আব্দুল জব্বার মেডিক্যাল গেইটের বাইরে শাশুড়ীর জন্য ফল কিনতে গিয়ে দেখেন রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে ছাত্র-জনতার সমাবেশ। সেই সাথে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে শ্লোগান আর মিছিলে উত্তাল রাজপথ। যুবক আব্দুল জব্বার অসুস্থ শাশুড়ীর জন্য ফল নেওয়ার কথা ভুলে গিয়ে ভাষার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সেই ঐতিহাসিক মিছিলে যোগ দেন। সে সময়ে পুলিশের এলোপাথারি গুলিতে অনেকের সাথে আব্দুল জব্বারও গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি ২১ ফেব্রæয়ারী রাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
শহীদ আব্দুল জব্বারকে সরকার ২০০০ সালে মরণোত্তর ২১শে পদক দিয়ে সম্মানিত করেন।

গফরগাঁওয়ের পাঁচুয়াতে ২০০৮ সালে ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। ২০০৮ সালে এই কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন করেন ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন, ড. হালিমা খাতুন ও রওশন আরা বাচ্চু।

অনেক দর্শনার্থী এখানে বই পড়তে ও ঘোরতে আসেন। এখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও শহীদ জব্বারের নামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জাদুঘরে শহীদ জব্বারের ব্যবহৃত কোনো জিনিস পত্র না থাকায় দর্শনার্থীদের আক্ষেপ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের প্রয়াত ছেলে নুরুল ইসলাম বাদলের জামাতা আব্দুল কুদ্দুছ বলেন,শহীদ জব্বারের ব্যবহৃত জিনিস পত্র পরিবারের সংগ্রহে ছিলনা। উনার ব্যবসায় ব্যবহৃত কাঁসার একটি দাঁড়িপাল্লা ও ট্রেনিংরত সশস্ত্র ফটোগ্রাফ আনসার একাডেমীতে দেয়া হয়েছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image