নিউজ ডেস্ক : ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামী ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের বিস্তারিত গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ডিসেম্বর মাস, বিজয়ের মাস। আনন্দের মাস। স্বজন হারানোর মাস। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ্বের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। জাতির পিতার নির্দেশনা ও নেতৃত্বে দেশে নারীর ক্ষমতায়নের শুরু। তিনি সংবিধানে নারীর সম-অধিকার, মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা সম্মানে ভূষিত, চিকিৎসা ও পূর্নবাসন করেন। তাদের কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, নারীর শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়া দিবস নারীর অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস। নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন এবং নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরাবোজ্জ্বল ভূমিকা পালনে স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ জন বিশিষ্ট নারী বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ প্রদানের লক্ষ্যে চুড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। পদক প্রাপ্ত ৫ জন বিশিষ্ট নারী ও তাদের অবদানের ক্ষেত্র হলো- নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপচার্য খালেদা একরাম, মরণোত্তর (ঢাকা জেলা)। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডাঃ হালিদা হানুম আখতার (রংপুর জেলা)। নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, মরণোত্তর (নেত্রকোনা জেলা)। নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার (লক্ষীপুর জেলা) এবং পল্লী উন্নয়নে রনিতা বালা (ঠাকুরগাঁও জেলা)।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০.০০টায় ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করবেন। পদক প্রাপ্তরা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উপস্থিত থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক গ্রহণ করবেন। পদক প্রাপ্তদের আঠারো ক্যারেট মানের পঁচিশ গ্রাম স্বর্ণ নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, প্রত্যেক চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব মোঃ মুহিবুজ্জামান ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মোঃ শাহেনুর মিয়াসহ গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালে কর্মস্থলে নারীর অংশগ্রহণ ৫০:৫০ উন্নীত করার ঘোষণা করেছেন। সে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩৫ টি বিভিন্ন ট্রেডে ৭ লক্ষ নারীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। শিক্ষা, চাকুরি, ব্যবসা ও আত্মকর্মসংস্থান সকল ক্ষেতে নারীর আজ সফল অগ্রযাত্রা। নারীরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে আজ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে রোল মডেল। সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ব শীর্ষে এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বে ৭ম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এঁর বাণীসহ বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। বেগম রোকেয়া দিবস ও পদক প্রদান উদযাপন অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। টেলিভিশন ও রেডিওতে নারীর অধিকার ও সমতা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। নারী শিক্ষা, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার বিতরণ ও স্থাপন করা হবে।
বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় নারী উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং এ বিষয়ে প্রচার ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আলোচনা অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আপনাদের বহুল প্রচারিত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় মাধ্যমে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহিত সকল কর্মসুচি সর্বস্তরের মানুষ জানতে পারবে। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারী উন্নয়নে অসামান্য অগ্রগতি, শিক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সমতা প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য হ্রাস ও সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: