• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনের প্রত্যয়ে বিজয় দিবস পালিত


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:২২ এএম
গাজীপুরের ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের শিক্ষার্থীরা।
৬০ ফুট জাতীয় পতাকাসহ শ্রদ্ধা

নিউজ ডেস্ক:  ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ মা-বোনের সভ্রমের বিনিময়ে আসে ২৩ বছরের দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙা বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির বিজয়ের ৫১ বছরপূর্তিতে শুক্রবার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে দেশের মানুষ শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করেছে জাতির সূর্য সন্তানদের। তাঁদের এই আত্মদানকে স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনের প্রত্যয় নিয়েছেন শ্রদ্ধা জানাতে আসা সবাই।

সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষের ঢল নামে। সবার হাতেই ছিল বীর শহীদদের জন্য শ্রদ্ধার নৈবেদ্য, মুখে বিজয়ের হাসি, চোখে নতুন আগামীর প্রত্যয়। সারিবদ্ধভাবে তাঁরা শহীদবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় আরও বাড়ে।

সাভার থেকে এসেছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত মো. তাছির উদ্দিন। তিনি জানান, সুস্থ থাকাকালে আগে এলাকায় ইমামতি করতেন। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ছাত্রদের দিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়াতেন এবং স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন। বছর দুয়েক আগে পক্ষাঘাতে পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় এখন আর কাজ করতে পারেন না। তবে প্রতি বছর স্মৃতিসৌধে এসে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ভুল হয় না তাঁর।

৬০ ফুট জাতীয় পতাকাসহ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন গাজীপুরের ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকাল পৌনে ৭টার দিকে স্মৃতিসৌধের মূল বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁরা। এ সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তখন রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।

এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সরকারের উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।

এদিকে, সকালে জাতীয় প্যারেড চত্বরে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে অভিবাদন গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে যোগদান ও প্রত্যক্ষ করেন।

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিজয়ের ৫১ বছরে সাম্প্রদায়িক শক্তি জঙ্গিবাদী বিএনপি বিজয়কে নস্যাৎ করতে তৎপর। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পূর্ণভাবে ভূলুণ্ঠিত। দেশে গণতন্ত্র নেই, আছে অর্থনৈতিক লুটপাট, চাঁদাবাজি।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আর কোনো আপস নয়। যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাদের সঙ্গে কোনো আলাপ চলতে পারে না। যারা দেশবিরোধী তাদের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে কোনো আলোচনা চলবে না।

গণফোরাম সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন দেশমাতৃকার জন্য যারা অত্বদান করেছে আমরা তাদের আবারো স্মরণ করাতে এসেছি । ৭১ এ আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি কিন্তু ভোটরে অধিকার থেকে আমরা বন্চিত । অর্থনৈতিক মুক্তি সুদুর পরাহত । ব্যাংক খাত সহ সর্বত্র লুটপাট চলছে । শাসন ব্যবস্হার পরির্বতন ছাড়া সাধারন মানুষে র মুক্তি সম্ভব না ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ ধারণ করতেন, সেই মূল্যবোধে আমাদের নতুন প্রজন্ম গভীরভাবে উজ্জীবিত এবং অনুপ্রাণিত।

জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৫০ বছরেও স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন হয়নি। শোষণ, বঞ্চনা, দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পায়নি দেশের মানুষ।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ভারসাম্য ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করার লক্ষ্যে সারাদেশের মানুষের মধ্যে এক গণজাগরণ সৃষ্টি হওয়া দরকার।

বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা: গতকাল স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, জাসদ, বাসদ, জেএসডি, বিকল্পধারা, তরীকত ফেডারেশন, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফ্রন্ট, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, জাকের পার্টি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুবদল, শ্রমিক দলসহ প্রভৃতি দল ও সংগঠন।

শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, সরকারি কর্ম কমিশন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, উদীচী, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, জনতা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, জাগ্রত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মেডিকেল প্র্যাকটিশনার্স অ্যাসোসিয়েশন, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, বাঁধন, মাশরুম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image