
নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে( ২৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করার সময় অন্তত ১৭ জন গণমাধ্যমকর্মী আহত হয়েছেন ।
সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন দৈনিক ইত্তেফাকের দুই মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার । আহত দুই সাংবাদিক হলেন- মাল্টিমিডিয়ার রিপোর্টার শেখ নাছের ও তানভীর আহাম্মেদ । দৈনিক বাংলা মোড়ে ফেসবুকে লাইভ চলাকালে তানভীরের ওপর হামলা করা হয় । তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । আর কাকরাইল মোড়ে শেখ নাছেরের ওপর হামলা করা হয় । সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন ।
এরপর একে একে সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর আসতে থাকে । দৈনিক কালবেলার স্টাফ রিপোর্টার মো. রাফসান জানি । কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশ- বিএনপির সংঘর্ষের সময় তিনি আহত হন । বিএনপি কর্মীরা রাফসান জানির ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে রড দিয়ে পেটায় বলে অভিযোগ করেন তিনি ।
কাকরাইল মোড়ে দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার শেখ নাছেরের ওপর হামলা করা হয় ।
কালবেলার মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার তৌহিদুল ইসলাম তারেকও নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে বিএনপি কর্মীদের হামলার শিকার হন । একই পত্রিকার সাংবাদিক আবু সালেহ মুসাকে আওয়ামী লীগ কর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছে । কালবেলার আরেক প্রতিবেদক রবিউল ইসলাম রুবেল ইট- পাটকেলের আঘাতে গুরুতর আহত হন ।
এদিকে বিজয়নগরে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিলের ছবি তোলার সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হন দৈনিক ইনকিলাবের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার এস এ মাসুম । মাসুমের সহকর্মীরা জানান, ওই মিছিলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা হামলা চালায় । কিন্তু মাসুমের সঙ্গে প্রেসকার্ড থাকলেও পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা মাসুমকে মারধর করে । তাকে উদ্ধার করে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার তানভীর আহাম্মেদকে ।
হামলার শিকার হয়েছেন একুশে টিভির দুই সাংবাদিক তৌহিদুর রহমান ও আরিফুর রহমান । তাদের বহনকারী গাড়ি থামিয়ে নামতে বাধ্য করা হয় । তাদের ক্যামেরা ফেলে দেওয়া হয় এবং গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় ।
কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাড়ির সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহের সময় দৈনিক কালের কণ্ঠের দুই ফটোসাংবাদিক বিভাগীয় ইনচার্জ শেখ হাসান আলী ও স্টাফ ফটোগ্রাফার লুৎফর মারধরের শিকার হন ।
দ্য ডেইলি নিউ এজের সাংবাদিক আহমেদ ফয়েজ মাথায় রাবার বুলেটের আঘাত পান । দেশ রূপান্তরের সাংবাদিক আরিফুর রহমান রাব্বি হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন । এদিকে নটরডেম কলেজের সামনে বিএনপি কর্মীদের হামলার শিকার হন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ আনিস ।
আহত অবস্থায় দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার তানভীর আহম্মেদ ও শেখ নাছের । ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে আহত হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল, আলোকচিত্রী সাজ্জাদ হোসেন ও রিপোর্টার জোবায়ের আহমেদসহ তিন সাংবাদিক । এছাড়াও ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে আহত হয়েছেন ঢাকানিউজ২৪ডটকমের বিশেষ প্রতিবেদক জহিরুল ইসলাম সানি।
রাজনৈতিক দলের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের( বিএফইউজে) একাংশ । তারা এ হামলার জন্য বিএনপি – জামায়াতকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন । পাশাপাশি অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি ।
শনিবার( ২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও দাবি জানান সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ ।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: