
জহিরুল ইসলাম সানি
রাবারকে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স এসোসিয়েশন। রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তোলা হয়।
রাবার গার্ডেন ওনার্স এসোসিয়েশন' এর উপদেষ্টা এবং এফবিসিসিআই’র পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাদের দেশের রাবার শিল্প ধীরে ধীরে হলেও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে রাবার শিল্প এরই মধ্যে বিশেষ অবদান রাখতে শুরু করেছে। দেশে উৎপাদিত উন্নত মানের রাবার দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। রাবার শিল্প/চাষ মূলত বিদেশ থেকে দেশে এসেছে। বর্তমানে রাবার দিয়ে সারা বিশ্বে ১ লক্ষ ২০ হাজার ধরনের দ্রব্য সামগ্রী তৈরি হচ্ছে। রাবার দিয়ে প্রধানত গাড়ির চাকার টায়ার, টিউব, জুতার সোল, স্যান্ডেল, ফোম-রেক্সিন, হোসপাইপ, গাম, খেলনা, শিল্প কারখানার দ্রব্য-সামগ্রী, চিকিৎসাশাস্ত্রের বিভিন্ন সামগ্রী সহ গৃহস্থালি কাজের ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ রাবার চাষে নবীন হলেও এর ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, পরিবেশ সহায়ক ও আর্থ-সামাজিক প্রয়োজনে রাবার চাষের গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য রাবার উৎপাদনকারী দেশ এটিকে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও আমাদের দেশে এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি, যার ফলে এ খাতের উদ্যোক্তা-বৃন্দ সরকার প্রদত্ত কৃষি বিষয়ক সকল প্রণোদনা ও সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এ খাতের বিকাশে রাবার-কে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান সংগঠনটি।
এছাড়াও দেশের রাবার শিল্পের সম্প্রসারণ এবং গুণগত মান সম্পূর্ণ রাবার উৎপাদনের লক্ষ্যে বিদ্যমান সমস্যা নিরসন-সহ সরকারের নিকট ১৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- ১৯৮০-৮১ সালের বরাদ্দকৃত প্লট সমূহের চুক্তির নবায়নের ব্যবস্থা করা। রাবার চাষীদের স্বল্প সুদের ঋণ সুবিধা প্রদান। দেশের রাবার চাষীদের জন্য সরকারি অনুদান ও ভর্তুকি দেওয়া। রাবার চাষীদের বীমা সুবিধা প্রদান করা। বিদেশ হতে উচ্চ ফলনশীল বীজ জামদানির সুবিধা পাওয়া। রাবার চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য নতুন জমি বরাদ্দ দেয়া। রাবারকে কৃষি পণ্য হিসেবে ঘোষণা। দেশে উৎপাদিত রাবার পণ্যের উপর ভ্যাট/ট্যাক্স প্রত্যাহার। হেডম্যান রিপোর্টের যথেষ্ট ব্যবহার বন্ধ করা। রাবার চাষে বরাদ্দকৃত এলাকায় অবৈধ দখল বন্ধ করা। কাচার রাবার সিট হস্তান্তরের নানা জটিলতার অবসান করা। রাবার বাগান এলাকায় টেপার আর শ্রমিক সংকট উত্তরণে সরকারের কাজ করা। রাবার বাগানে বর্ষার সময় রেইন গার্ডেনের ব্যবহার নিশ্চিত করা। রাবার বাগানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা। যেসব বাগানের মালিক ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে তাদের বাগানগুলি তাদের ওয়ারিশগণের নামে সহজে হস্তান্তর এবং নামজারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা। রাবার শিল্প-কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে রাবার রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাতা করা। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ-কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা।
সংবাদ সম্মেলনটিতে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স এসোসিয়েশনের মহাসচিব মনসুর আলম, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন, সাবেক সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এম আর
আপনার মতামত লিখুন: