• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

অর্থ অভাবে ধুঁকছে মৃৎশিল্প, সংকটে পরিবার-পরিজন       


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:১৭ পিএম
অর্থ অভাব
অর্থ অভাবে ধুকছে মৃৎশিল্প

শিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা : দক্ষিণাঞ্চলের লাকসাম উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বানিজ্যিক নগরী বিভিন্ন এলাকার কুমার পাড়ায় নানা সংকটময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশেষ করে আর্থিক সংকটের কারণে মাটি কিনতে না পারায় মৃৎশিল্পীরা মারাত্মক বিপাকে পড়েছে। এ অবস্থায় বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে নিপুণ হাতে ফুটিয়ে তোলা এ শিল্পের কারিগরেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন। কঠিন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছেন তারা। তবুও ধুকে ধুকে টিকে আছে মৃৎশিল্পীরা। এ বাস্তবতায়ও মৃৎশিল্পকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতার দাবি মৃৎশ্লিপীদের ।

জানা যায়, বিগত ২ বছর যাবত অদৃশ্য করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আর্থিক সংকটসহ নানাহ বাধা-বিপত্তির মাঝে পৈত্রিক পেশা ধরে রাখতে দুর্ভোগের শেষ নেই। উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় কুমার মাটি খুঁজে খুঁজে ব্যস্ত সময় পার করলেও পৈত্রিক পেশা কুমার শিল্পটি আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

কুমার শিল্পীদের একাধিক সূত্র জানায়, একটা সময় কুমার শিল্পের কাঁচা মাটি হাতের কাছেই পাওয়া যেতো। কিন্তু বর্তমানে তা অনেকটা দুষপ্রাপ্য হয়ে উঠেছে। তারপরও বেশি অর্থ ব্যয়ে কাঁচা মাটি সংগ্রহ করে হরেক রকমের মাটি দিয়ে জিনিসপত্র তৈরী করা হচ্ছে। কিন্তু বাজারে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। চলমান সময়ে মৃৎশিল্পীদের কদর একে বারেই নেই। এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই আজ বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম পৌরশহরের ধামৈচা, উপজেলার বাকই ইউনিয়নের কোঁয়ার, লালমাই উপজেলার শানিচৌঁ, বাগমারা, নাওড়া ও বিজয়পুর, মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার, লক্ষনপুর, নাওতলা, বচইড় ও ধিকচান্দা গ্রামে মৃৎশিল্পীদের তৎপরতা ছিলো চোখে পড়ার মতো। অথচ কালের আর্বত্তে এখন তা যেনো অতীত। লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার কুমার পট্টিতে এখন হা হা কার অবস্থা এবং অনেকই এ পেশা গুছিয়ে অন্য পেশায় নেমেছে।

সূত্র গুলো আরও জানায়, তাদের পৈত্রিক পেশা টিকিয়ে রাখতে কাঁচা মাটি কেনা, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, স্থানীয় সেন্ডিকেট চক্রের চাঁদাবাজিসহ নানাহ দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া এ অঞ্চলের অসংখ্য নদী-খাল, পুকুর ও জলাশয় অবৈধ ভরাট বানিজ্যে ওই কুমার মাটি সংগ্রহে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কুমার মাটির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। তারপরও খোঁজে পাচ্ছে না ওই মাটির সন্ধান। একটা সময় এলাকার পুকুর-জলাশয়, ডোবা নালা খননে মৃৎশিল্পীদের খবর দিতো কুমার মাটি নেয়ার জন্য। অথচ সেই অতীত আজ চিন্তাও করা যায় না। মৃৎশিল্পীদের মাটির তৈরীর সরঞ্জামের বিপরীতে বাজারে দেশী-বিদেশী নানাহ ব্র্যান্ডের সিলভার, প্লাষ্টিক ও ফাইবার মিশ্রিত পন্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কাঁচা মাটির তৈরী সরঞ্জাম এখন আর মানুষ কিনতে চায় না।

বানিজ্যিক নগরীখ্যাত লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার কুমার ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের কুমার পাড়ার চিত্রে কাঁচা মাটির তৈরী হাড়ি-পাতিল, কলস, থালা-বাটি, ফুলের টব, ফুলদানী, শিক্ষার্থীদের ব্যাংক, খেলনাসহ সৌখিন হরেক রকম সামগ্রী ব্যবহার ও বিপনন হতো। বাংলা বছরের ১লা বৈশাখ আসলেই দেখা যায় কুমার শিল্পীদের নানাহ কারু কাজে তৈরী নানা রকম পন্য বিভিন্ন মেলায় শোভা পেতো। কিন্তু এখন আজ যেন ওইসব পন্য হাতের নাগালের বাহিরে। কুমারদের হস্তশিল্পে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যে ভরা মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের ছবি ফুটিয়ে তুলতেন তারা। তৎকালীন সময়ে মৃৎশিল্পীদের তৈরী জিনিষপত্রের কোন বিকল্প ছিলো না।

 

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / এম আর

আরো পড়ুন

banner image
banner image