• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে শরীকদের টানাপোড়েন


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ০২ আগষ্ট, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৩৬ পিএম
এক দফা আন্দোলন
bnp aliance p

নিউজ ডেস্ক:   রাজপথ দখলের লড়াইয়ে বড় দু’দলের সঙ্গে রয়েছে সমমনা জোট ও দল। অবশ্য সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে যুগপৎ কর্মসূচিতে থাকা সমমনাদের সঙ্গে কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির চলছে টানাপোড়েন। অন্যদিকে বেশ কিছু দিন নিষ্ক্রিয় থাকলেও প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় আজ থেকে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল

বিশেষ করে গত শনিবার পবিত্র আশুরার দিন ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে ক্ষুব্ধ তারা। আজ বুধবার লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে বিএনপির কাছে ব্যাখ্যা চাইবে গণতন্ত্র মঞ্চ।অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, কৌশলগত কারণে শেষমুহূর্তে কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত করতে হয়।

দলগুলোর সূত্র জানায়, চলমান সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সমমনা জোটের মধ্যে অন্যতম গণতন্ত্র মঞ্চ। অন্যান্য সমমনা জোট ও দলের চেয়ে এই জোটকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে বিএনপি। তাদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল শুক্রবার মহাসমাবেশ থেকে মাঝে পবিত্র আশুরার দিন শনিবার বাদ দিয়ে রোববার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। হঠাৎ করে সমাবেশ থেকে পরদিনই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়টি প্রসঙ্গে তাদের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। এতে তারা বিস্মিত ও হতবাক হয়েছেন। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি সফল করার ক্ষেত্রে নানা বিষয় বিবেচনা করা উচিত ছিল।

গণতন্ত্র মঞ্চের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা না করেই অবস্থান কর্মসূচিটি দেওয়া হয়েছে। ওই কর্মসূচি সম্পূর্ণ অপরিপক্ব ও হঠকারী হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা জানতে চেয়েছি তারা এখনও কোনো ব্যাখ্যা দেননি। যুগপৎ ধারার আন্দোলনে থাকলেও বিএনপি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মসূচি দিচ্ছে। আমরা জনবলের সংখ্যার দিক থেকে বড় না হলেও রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকে অনেক বড়। বিএনপি আন্দোলন কোথায় নিয়ে যেতে চায়, প্রশ্ন তাদের।

সূত্র জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল গণতন্ত্র মঞ্চ সভা করেছে। সভায় সার্বিক বিষয় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সামনে রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছে। আপাতত তারা মঞ্চের গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তি দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং গণতন্ত্র মঞ্চের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে সুশীল সমাজের সঙ্গেও মতবিনিময়ের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে জোটটি। 

বিএনপির সমমনাদের সূত্র আরও জানায়, ঢাকার বাইরে তৃণমূলের নেতাদের দিয়ে ঢাকায় অবস্থান, ঘেরাও কর্মসূচি সফল করা কঠিন। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোসহ ঢাকার প্রতিটি থানা এবং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীর শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ছাড়া সফল আন্দোলন সম্ভব নয়। এ বিষয়গুলো মাথায় নিয়েই বিএনপিকে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে একটু দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তবে সেটা হয়তো বড় দল হিসেবে তাদের ব্যস্ততার জন্য হতে পারে। এটা আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব। এখন তাদের যে কোনোভাবেই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ রকম একটি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনোরকম ভুল করলে চলবে না। তাই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষয়ক্ষতি কম হতে পারে বলেই মনে করছি। কিন্তু গত শনিবারের কর্মসূচির পর মনে হয়েছে তাদের আন্দোলনের চূড়া একটি ভবনের চতুর্থ তলা থেকে যেন দ্বিতীয় তলায় চলে এসেছে। এটা কাটিয়ে উঠতে হবে।

অবশ্য লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, কৌশলগত কারণে বেশি আগে কর্মসূচি সম্পর্কে সমমনাদের জানানো সম্ভব হয় না। কর্মসূচি ঘোষণার আগে তাদের অবহিত করা হয়েছে। আমি নিজেই টেলিফোন ও মেসেজে তা জানিয়েছি। একই সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, শর্তের বেড়াজালে বন্ধুত্ব হয় না, সমঝোতার ভিত্তিতেই বন্ধুত্ব হয়।

জোট নেতারা জানান, গত শনিবার ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলা, নিপীড়ন-নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঘোষিত কর্মসূচি নিয়েও তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় জটিলতা। সোমবার সারাদেশে মহানগর ও জেলা সদরে জনসমাবেশ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। শুরুতে এককভাবে বিএনপির কর্মসূচি বলা হলেও রোববার রাতে সমমনা দল ও জোটকেও একই কর্মসূচি পালনের জন্য বলা হয়। কিন্তু ছোট দল ও জোটের পক্ষে তাৎক্ষণিক কিংবা স্বল্প সময়ের নোটিশে কর্মসূচি পালন সম্ভব না হওয়ায় অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে গণতন্ত্র মঞ্চসহ দু-একটি দল ও জোট এ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামলেও বেশির ভাগ এদিন কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়।

কর্মসূচি নিয়ে দু’পক্ষের টানাপোড়েন ছাড়াও তাদের ওপর হামলা-মামলার ঘটনায় বিএনপির নীরব ভূমিকা ক্ষুব্ধ করেছে জোট নেতাদের। বিশেষ করে শনিবার ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে গণতন্ত্র মঞ্চের একজন শীর্ষ নেতাসহ বেশ কয়েক নেতাকর্মীকে আটক এবং যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে ১২ দলীয় জোটের দুই শীর্ষ নেতার ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি, খোঁজ নেওয়া হয়নি বলে জোট নেতাদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, আন্দোলনে বহুবিধ কৌশল অবলম্বন করতে হয়। আমরা মনে করি, জনগণের আন্দোলন আরও শানিত হচ্ছে এবং আমাদের বিজয় অনিবার্য। ফ্যাসিবাদ-বিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে দল ও জোটগুলোর আরও বেশি সমন্বিতভাবে পথ চলতে হবে।

১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, কাজের ভেতর ভুলত্রুটি হতেই পারে। সেটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে। বিএনপির সঙ্গে তাদের এমন কোনো দূরত্ব তৈরি হয়নি বলে জানান।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image