নিজস্ব প্রতিবেদক
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ৩০২ সদস্যের কমিটি গঠন নিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে
চলছে অস্থিরতা। অন্ত:কোন্দলে সংগঠনটি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। ফলে সংগঠনে নেই শৃঙ্খলা। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র নেতারা বর্তমান কমিটি ভেঙ্গেদিয়ে নতুন কমিটির দাবি জানাচ্ছেন।
শোনাযাচ্ছে খুব শীঘ্রই ভেঙ্গে দেওয়া হতে পারে বর্তমান কমিটি।
জানা যায়, মূলত এ কমিটির গঠন নিয়েই অস্থিরতার সৃষ্টি। ইতোমধ্যে অছাত্র,বিবাহিত, ছিনতাইসহ নানা অভিযোগে পদ স্থগিত করা হয়ছে ৩২ নেতার।
ক্ষুদ্ধ এক ছাত্রনেতা বলেন, আমর চাই ছত্রদলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিতে হবে।
জানা যায়,ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় পূর্নাঙ্গ কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কমিটি ঘোষণা করা হয় গত ১১ই সেপ্টেম্বর। এতে ঠাই পেয়েছে অযোগ্য আর বিবাহিতরা। অবমূল্যায়ন করা হয়েছে যোগ্যদের।
ক্ষুদ্ধ নেতাদের আরও অভিযোগ ৩০২ সদস্যদের কমিটির অর্ধেক সদস্যের বিরুদ্ধে বিবাহ,সিনিয়র (এস এস এস ২০০২ আগে) নিষ্ক্রিয় ,অযোগ্য। এছাড়া এ কমিটি নিয়ে করা হয়েছে স্বজন প্রীতির। ফলে ভেঙে পরেছে ছাত্রদলের চেইন ইন কমান্ড।
দলীয় সূত্রে জানা যায়,এই কোন্দোলের সূত্রপাত হয় ঢাকার ইউনিট কমিটি গঠন করা সময় থেকেই ।
গত বছর ১৭ই এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুপার ফাইভ ঘোষনা করেন। কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন সভাপতি,সাইফ মাহমুদ জুয়েল সাধারণ সম্পাদক,রাশেদ ইকবাল খান সিনিয়র সহ-সভাপতি, রাকিবুল ইসলাম রাকিব সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন।
এরপর ১০ মে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি কলেজ,একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও দুটি মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন। এগুলো হলো ঢাকা কলেজ, বাঙলা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও পশ্চিম ছাত্রদল। এই কমিটির বেশীরভাগ নেতার বাড়ি বরিশাল অঞ্চলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বরিশালের হওয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হন। এসময় এক মহানগর বিএনপি নেতার নাম উঠে কমিটি নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেট ।
গুরুত্বপূর্ণ ৮ জেলা ইউনিট কমিটি গঠন করা সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর সাথে দূরত্ব বাড়ে সুপার ফাইভ এর বাকী তিনজনের ,তখন তারা তাদের মতামত অগ্রাহ্য করা হয় এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর স্বেচ্ছচারিতার অভিযোগ করেন।
গত ৩০ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি এস এস সি ২০০১ সন যা কেন্দ্রীয় কমিটি বয়স সীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে। সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এর গ্রুপের।এ কমিটির ক্ষেত্রে যোগ্যদের বাদ ও নিজ গ্রুপ ও এলাকার প্রাধান্য দেয়া হয়। এসময় বিভিন্ন পত্রিকায় ও টেলিভিশন নিউজে কমিটিকে বরিশাল সমিতি হিসেবে আখ্যায়িত করে। সংগঠনের নেতারা আলাপচারিতায় বর্তমান ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট কে বরিশাল সমিতি হিসেবে সম্বোধন করে। এসব কমিটি ছাত্রদল ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ করলেও খুব একটা জনসম্প্রিক্ত করতে পারে নাই,এসব মিছিল ৩০-৪০ জনের মধ্যে সিমাবদ্ধ,যেখানে কলেজ কমিটি দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কমিটি ঘোষণা পর যোগ্যদের অবমূল্যায়ন করে অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠে।রীতি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যেতে পারে নাই সুপার ফাইভ এর নেতৃত্বে। এরপর ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে প্রোগ্রাম ও মিছিল করে বিভক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা পর অযোগ্যদের বাতিল ও বঞ্চিতদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায় বাদ পরা নেতৃবৃন্দ, তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তাদের অভিযোগ বিবাহিত, সনদহীন,নিষ্ক্রিয়, আঞ্চলিকতা, অযোগ্য ও স্বজনপ্রতির।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রথা অনুযায়ী নতুন কমিটি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে থাকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা চার মাস পূর্ণ হলেও নতুন কমিটি মাযারে ফুল দিতে পারে নাই ,যা নিয়ে ছাত্রদলের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
আংশিক কমিটি ঘোষণা পর থেকে বিভিন্ন গ্রুপ আলাদা আলাদা ভাবে কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন। কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা পর গ্রুপিং আরো জোরালো হয়, ভেঙে পরে চেইন ইন কমান্ড। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব প্রত্যাশায় বর্তমান কমিটির নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর থেকেই শোঢাউন করছে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আরো দৃশ্যমান হয়েছে।
বর্তমান কমিটির নেতারা সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন অঞ্চলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত, এরা হলো ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল অনুসারী হিসেবে পরিচিত বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ,সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আখতার হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমুনিল ইসলাম জিসান , ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এর অনুসারী হিসেবে পরিচিত সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাকিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনিয়র সহ-সভাপতি এজাজুল কবির রুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল অনুসারী হিসেবে পরিচিত সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন নাসির ও আখতার উজ জামান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু অনুসারী হিসেবে পরিচিত সহ-সভাপতি মারুফ এলাহী রনি ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রুহুল কবির রিজভী অনুসারী হিসেবে পরিচিত সহ-সভাপতি মাহাবুব মিয়া ও এক নম্বর সহ-সভাপতি তানজিল হাসান
নতুন নেতৃত্ব সভাপতি পদের জন্য আলোচনা আছেন রাকিবুল ইসলাম রাকিব,আবু আফসান মোহাম্মদ ইযাহিয়া,আখাতার হোসেন নাসির উদ্দিন নাসির, মাহাবুব মিয়া ,শ্যামল মালুম সাধারণ সম্পাদক পদে জন্য আমান উল্লাহ আমান, ইজাজুল কবির রুয়েল,খোরশেদ আলম সোহেল,মঞ্জুরুল রিয়াদ ,সাফি ইসলাম, মোমুনিল ইসলাম জিসান,ফারুক হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান,শরীফ প্রধান সহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতারাও।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এমআর
আপনার মতামত লিখুন: