• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

চলচ্চিত্রের রাজকন্যার শবনমের জন্মদিন


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:০৩ পিএম
চলচ্চিত্রের রাজকন্যার জন্মদিন
রাজকন্যা কিংবদন্তি অভিনত্রেী শবনম

নিউজ ডেস্ক : ৬০-৭০ দশকের পাকিস্তানের একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়িকা, পা রাখেন এদেশের চলচ্চিত্র পাড়ায়। অভিনয় শুরু করলেন প্রথম ছবি ‘হারানো দিন’ এ। লাখ লাখ দর্শকদের মনে শিহরণ জাগালেন। তিনি ভক্ত-অনুরাগীদের রূপনগরের রাজকন্যা কিংবদন্তি অভিনত্রেী শবনম।

বাংলা চলচ্চিত্রের আছে সোনালি ইতিহাস, আছে হৃদয়ে দাগ কেটে যাওয়ার মতো সিনেমা, গল্প, তবে যারা এই গল্পকে নিজের মধ্যে ধারণ করে বড় পর্দায় তুলে ধরেন; সেইসব অভিনয়শিল্পীও দাগ কেটে যান নিশ্চিতরূপে। তেমনি একজন অভিনেত্রী শবনম।

ঝর্ণা বসাক থেকে আজকের শবনম, মাঝে ছিল সুদূরপথের যাত্রা। জন্ম ব্রিটিশ ভারতে, বাবা ননী বসাক ছিলেন একজন স্কাউট প্রশিক্ষক ও ফুটবল রেফারি। নাচের প্রতি ছিল ঝরনার ওরফে শবনমের তীব্র আবেগ, প্রবল ভালোবাসা। শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছিলেন শবনম। সেখানেই একটি নৃত্যের অনুষ্ঠানে এহতেশাম তার নাচ দেখে ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে কাজ করে নজর কাড়েন পরিচালক এহতেশামের পাশাপাশি পরিচালক মুস্তাফিজের।

বাংলা চলচ্চিত্র 'হারানো দিনে'র মাধ্যমে ১৯৬১ সালে পরিচালক মুস্তাফিজের মাধ্যমে নায়িকা হিসেবে অভিষেক ঘটল। মালা আর কামালের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। একসময়কার শ্রেষ্ঠ জুটি ছিল ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রের ‘মালা’ ভূমিকায় শবনম এবং ‘কামাল’ চরিত্রে অভিনয় করা বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা রহমান। অভিনয়ে পারদর্শিতা, মুখভঙ্গি, চাহনি দিয়ে প্রথম ছবি দিয়েই আলোচনায় চলে এলেন শবনম।

বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করলেন। তার অভিনীত ‘রূপনগরের রাজকন্যা’ গানের মতোই দর্শকদের কাছে তিনি রাজকন্যাই বটে। তার অভিনীত আরেকটি ব্যবসা সফল সিনেমা ‘দর্শন’। ঢাকায় তৈরি হওয়া ১৯৬৮ সালের উল্লেখযোগ্য একটি উর্দু সিনেমা। সেখানেও এই ‍জুটিকে দেখেছেন দর্শকরা। ‘হারানো দিন’ ছবিতে তাকে নাম দেওয়া হয় শবনম। ঝর্ণা বসাক থেকে হয়ে ওঠলেন শবনম।

১৯৬২ সালে কাজ করলেন পাকিস্তানি উর্দু ভাষার চলচ্চিত্র ‘চান্দা’ ছবিতে। সেখানেও প্রমাণ দিলেন অভিনয় দক্ষতার। তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান শবনম। মুস্তাফিজের প্রথম উর্দু ছবি 'তালাশ' মুক্তি পায় ১৯৬৩ সালে। 'তালাশ'ও শবনমের সুপারহিট একটি ছবি। অভিনয়ে নৈপুণ্যতা তাকে বানাল রুপালি পর্দার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী নায়িকা। ছিলেন রানির আসনে।

শবনম অভিনীত সিনোমর বেশকিছু জনপ্রিয় গান এখনো মানুষের মুখে মুখে, ‘এই যে নিঝুম রাত’, ‘বুঝিনা মন যে দোলে’, ‘রূপনগরের রাজকন্যা’, ‘একটা চিঠি লিখে দাও’ বেশ জনপ্রিয়। একই সঙ্গে ‘মান কি জিত’ মুভিতে বিখ্যাত সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার গাওয়া সুপারহিট গান ‘মেরা বাবু ছেল ছাবিলা’য় শবনমের পারফর্মেন্স অন্যমাত্রায় প্রশংসিত হয়।

সাল ১৯৬৮ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকলেন শবনম। সেখানেও শবনম পাকিস্তানের লাহোরের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন। পরে ১৯৮৮ সালে ঢাকাই চলচ্চিত্র একই সঙ্গে লাহোরের চলচ্চিত্রে সমানতালে কাজ করেছেন, দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। প্রায় ৫০টিরও বেশি পাকিস্তানি ‍মুভিতে কাজ করেছেন। নব্বই দশক পর্যন্ত পাকিস্তান আর বাংলাদেশে প্রায় ১৮৫টি ছবিতে অভিনয় করেন।

হোক বাংলা চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’ দিয়ে অথবা ‘উর্দু মুভি ‘পাকিজা’ তার অভিনয় আজও ভ্ক্তদের হৃদয়ে শক্ত জায়গা করে রেখেছে। ‘সন্ধি’, ‘শর্ত’, ‘সহধর্মিণী’, ‘যোগাযোগ’, ‘জুলি’, ‘বশিরা’, ‘দিল’সহ অনেক বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। নতুনভাবে প্রত্যাবর্তন ঘটে অভিনেত্রী শবনমের। ছবিটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায় এবং শবনম এ প্রজন্মের দর্শকদের কাছেও সমান জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তানের  প্রায় সবই শীর্ষ পুরষ্কার জিতেছেন, তিনবার পেয়েছেন পাকিস্তানের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, নিগার অ্যাওয়ার্ড জয় করেছেন তেরোবার, যা আজও একটি রেকর্ড। ১৯৬৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর খ্যাতিমান সংগীত পরিচালক রবীণ ঘোষকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন।

বিগত কয়েক বছর ধরে চলচ্চিত্র অঙ্গনের তার পায়ের ছাপ নেই। স্বামী রবীণ ঘোষের প্রয়াণের পর ছেলে রনি ঘোষকে নিয়ে জীবনের বাকিটা সময় কাটাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। চলচ্চিত্রপাড়া, এফডিসির প্রতি খানিকটা আক্ষেপ নিয়েই অভিনয়জগৎ থেকে দূরে সরে এসেছেন প্রায় চার দশকের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনম।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে এফডিসির বেহাল দশা নিয়ে আক্ষেপ জানিয়েছেন। তবে বর্তমানে তাকে বড় পর্দায় দেখা না গেলেও বাংলা চলচ্চিত্রে তার কাজ সিনেমাপ্রেমীদের মনে আজও শিহরণ জাগায়।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image