• ঢাকা
  • শনিবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

সদরঘাটে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১০ পিএম
সদরঘাটে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি
সদরঘাটে লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় চাঁদাবাজরা।

জহিরুল ইসলাম সানি : রাজধানীর সদরঘাটে ভোর থেকেই লঞ্চ টার্মিনালের সামনে থাকা চার থেকে পাঁচ শতাধিক সিএনজি থেকে ডিএমপি কোতোয়ালি থানা সদরঘাট ফাঁড়ি পুলিশের নামে প্রকাশ্যে পঞ্চাশ টাকা করে দৈনিক চাঁদা তোলা হচ্ছে। কেবল সিএনজি নয়, মালবোঝাই ভ্যান, ফুটপাত, ঠেলাগাড়ি ও রিকশা থেকেও চলছে চাঁদাবাজি। 

একাধিক চাঁদা আদায়কারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সদরঘাট ফাঁড়ির পুলিশের নাম ব্যবহার করে প্রতিদিন এ চাঁদাবাজি হচ্ছে। এদিকে, এর প্রভাবে সিএনজি চালকরা আবার যাত্রীদের কাছ থেকে চারগুণ ভাড়া হাঁকছে। কেউ যায় কেউবা আবার প্রতিবাদ করছে বলে সরেজমিনে দেখা গেছে। 

সুত্রে জানা গেছে, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘিরে দেধারছে চাঁদাবাজি চলছে। তারমধ্যে যাত্রীদের বিড়ম্বনায় ফেলে ৭টি গেটের সামনে সদরঘাট ফাঁড়ি পুলিশের নামে টার্মিনালের ১ নম্বর গেটের সামনে প্রতি সিএনজি থেকে ৫০ টাকা করে চাদা তুলছে শাহা আলম, দুই নম্বর গেটে হান্নান, তিন নম্বরে আনিস, চার নম্বরে জামাল, পাচঁ নম্বর গেটে রাসেল এবং টার্মিনালের পশ্চিম দিকের শেষে মসজিদটির সামনে রাস্তা থেকে ওয়াইজঘাট পটুয়াখালী ঘাটের সামনে চাঁদা তোলে নুরু নামের এক চাঁদাবাজ। এছাড়া সে চোরাই মোবাইল ও ওয়াইজঘাট এলাকায় রাস্তায় ঝুড়িতে সাজিয়ে বাহারি রংয়ের ছোট বড় জুতার হকারদের কাছ থেকেও দৈনিক ৩০০ টাকা করে চাঁদা তুলছে। এছাড়া লুঙ্গি শাড়ি ও জামা কাপড় হকারকেও ছাড় দেয় না। তাদের কাছ থেকেও ২৫০ টাকা করে দৈনিক চাঁদা নিচ্ছে। বর্তমানে ওই চাঁদাবাজ দীর্ঘদিন ধরে ওয়াইজঘাট এলাকায় রাস্তায় হকার বসিয়ে চাঁদাবাজি ছাড়াও যানজট সৃষ্টি করছে। আর এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে লঞ্চ যাত্রীরা। 

এসময় চাঁদাবাজ নুরু জানায়, বহুবছর যাবত এ এলাকা দেখছেন তিনি। পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই চাঁদাবাজি করছে বলে জানান তিনি। 

অন্যদিকে, স্বপ্নের পদ্মা সেতু হওয়ার পরে লঞ্চ যাত্রী অনেকটা কমেছে। আগে বরিশালের বিভিন্ন জেলায় যেতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা লাগতো গাড়িতে। পদ্মায় সেতু নির্মাণের পর থেকে ৩ থেকে চার ঘন্টা লাগে বরিশালের জেলাগুলোতে পরিবহনে যেতে। তাই সদরঘাটে যাত্রী কমলেও অধ্বশতাধিক লঞ্চে প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে দৈনিক ৩৫ থেকে ৪০ হাজার যাত্রী আসে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাঁচ শতাধিক সিএনজি চালক নিয়মিত ভোরে সদরঘাট টার্মিনালে যাত্রী টানতে আসে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর একাধিক কর্মকর্তা।

শতাধিক সিএনজি চালক এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিদিন ভোরে সদরঘাটে যাত্রী মিলে। তাই তারা নিয়মিত এখানে থাকেন সিএনজি নিয়ে। ভাড়া একটু বেশীই নেয় তারা। কারণ পুলিশের নামে ৫০ টাকা দিতে হয়। তাছাড়া সিটি টোলের নামেও চাঁদা দিতে হয়। তাই তারাও ভাড়া বেশি হাঁকে।

মোবারক, আয়নাল, সালাম, আমিন, খলিল ও কালু নামে একাধিক সিএনজি চালক বলেন, তারা থাকেন কেরানীগঞ্জে। নিয়মিত সদরঘাট টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরা, এয়ারপোর্ট, মিরপুর ও গাবতলিসহ বিভিন্ন এলাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আসি। ভাড়া ১ হাজার কিংবা ১২-শ টাকা চাওয়া হয়। কেউ কেউ আবার যেতে চায়। কেউবা দেয় বকাঝকা। 

এ বিষয়ে ডিএমপি কোতোয়ালি থানা সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ আক্কাস ঢাকা নিউজ ২৪ কে বলেন, আমি সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে নতুন জয়েন করেছি। তাছাড়া গত ১৫ থেকে ১৮ দিন ধরে সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় সিএনজি আসতে পারে না। আর আসলেই সার্জেন্ট ধরে ধরে মামলা দিচ্ছে। তাছাড়া সদরঘাট এলাকার চাঁদাবাজির বিষয়েও কিছু জানেন না তিনি। 

সদরঘাটে ভোরে সিএনজি থেকে চাঁদাবাজির বিষয়ে টার্মিনালের আশপাশের দোকানিরা জানান, সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় সিএনজি থামলেই দেখা যায়, কিছু লোক এসে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। সেটা চাঁদা কিনা তা আমরা জানি না।

তারা আরও বলেন, প্রতিদিন শ্যামবাজার থেকে ওয়াইজঘাট পর্যন্ত সিএনজির সারি সারি লাইন থাকে। এমনকি সিএনজির কারণে রাস্তাঘাট পুরোটাই যানজট থাকায় চরম বীড়ম্বনায় পড়ছেন যাত্রীরা।

ডিএমপি কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাঃ মাহফুজুর রহমান মিয়া ঢাকা নিউজ ২৪কে বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি তার নজরে নেই। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। প্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস

আরো পড়ুন

banner image
banner image