মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর খোকন (৪৫) হত্যা মামলার এজহারভূক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। গ্রেফতার আসামি মো. হুমায়ুন মিয়া(৩০) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দিরবন এলাকার আব্দুল গণির ছেলে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গাইটাল চরপাড়া এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন সুন্দিরবন মাইজখাপন সাকিনের নিবাসী ভিকটিম খোকন মিয়া (৪৫), পিতা-মৃত লাল মিয়া প্রায় ১৭ বছর আগে একই এলাকার মৃত দুলাল মিয়ার মেয়ে মোছা. হোসনা বেগমকে বিয়ে করে এবং তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। প্রায় দুই তিন মাস আগে ভিকটিম খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী মোছা. হোসনা বেগমের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলে আসায় প্রায় দুই মাস আগে মোছা. হোসনা বেগম তাহার সন্তানদেরকে স্বামীর ঘরে রেখে তার বাবার বাড়ি চলে যায়। ভিকটিম খোকন মিয়া তার সন্তানদেরকে তার বোন মোছা. শিউলি আক্তারের কাছে দেখভালের জন্য রেখে ঢাকা শহরে গাড়ি চালাত এবং প্রতি সপ্তাহে তার সন্তানদের দেখার জন্য সে গ্রামের বাড়িতে আসত।
গত ৩০ নভেম্বর রাত ৮ টার সময় ভিকটিম খোকন মিয়া তার গ্রামের বাড়িতে এসেছে এমন সংবাদ পেয়ে ঐ দিন রাত ১১টার সময় মোছা. হোসনা বেগম তার স্বামী ভিকটিম খোকন মিয়াকে খবর দিয়ে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে আসে। রাতে ভিকটিম খোকন মিয়া নিজ বাড়িতে ফিরে না আসায় ভিকটিমের খোঁজ নেওয়ার জন্য ভিকটিমের বোন মোছা. শিউলি আক্তার ভিকটিমের ছেলে মো. ফেরদৌস মিয়া (১৩)কে পরদিন গত ১ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ৬ টার সময় মোছা. হোসনা বেগমের বাবার বাড়িতে পাঠান ।
মো. ফেরদৌস ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুন্দীরবন এলাকার ভিকটিমের শ্বশুর বাড়িতে দেখতে পায় আসামি মো. হুমায়ুন মিয়া(৩০) এবং আসামি রহিম মিয়া(৬৫)সহ অন্যান্য আসামিগণ ভিকটিমকে আটক করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারাত্বকভাবে মারপিট করছে। তখন ভিকটিমের ছেলে মো. ফেরদৌস মিয়া তাৎক্ষণিক বাড়িতে এসে ভিকটিমের বোন মোছা. শিউলি আক্তারসহ আত্মীয় স্বজনদেরকে ঘটনার বিষয়ে জানালে, তারা দ্রæত ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য আসামিদের বাড়িতে যায়। কিন্তু আসামিগণ তাদেরকে দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করতে না পেরে নিরুপায় হয়ে সদর থানায় এসে মৌখিকভাবে থানা পুলিশের কাছে ওই ঘটনার বিষয়ে অবহিত করে।
থানা পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য রওনা হয়ে পথিমধ্যে জানতে পারে যে, ভিকটিমকে আসামিগণ আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে গেছে। অতঃপর তারা সদর হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বোন মোছা. শিউলি আক্তার বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বর্ণিত বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে আসামিগণ গ্রেফতার এড়াতে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। ওই আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং মো. হুমায়ুন মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার আসামিকে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: