• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

আইওএম'র গাড়ি চালক মিজান এখন এলাকার ত্রাস


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৫ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৫৯ পিএম
আইওএম'র গাড়ি চালক মিজান এখন এলাকার ত্রাস
ইউনুছ মিস্ত্রির ছেলে মিজান

জাফর আলম, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে বসবাসকারী ইউনুছ মিস্ত্রির ছেলে মিজান প্রকাশ ড্রাইভার মিজান। এক সময় চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চায়ের দোকানে কারিগর হিসেবে কাজ করত। তারই ধারাবাহিকতায় সমিতিপাড়াও চায়ের দোকানের কারিগর হিসেবে বেশ পরিচিত মিজান। 

চট্টগ্রামে অবস্থানকালীন একটি হত্যা মামলার আসামী হয়ে পলাতক জীবন যাপন করে। তখনই ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন ধুর্ত এই মিজান। সেখান থেকে সমিতিপাড়ায় ফিরে বেকার থাকায় সমিতিপাড়ায় এলাকায় মানবপাচারে জড়িয়ে পড়ে। হয়ে যায় মানবপাচার মামলায় আসামিও। হত্যা মামলার পলাতক আসামী হয়ে শহরের সমিতিপাড়া থেকে আটক করে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

দীর্ঘ সময় জেলও খেটেছে। জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে বনে যান কিশোরগ্যাং লিডার। তার দলে রয়েছে ২০/২৫ জন কিশোর। চুরি, ছিনতায়, মারামারী ও খাসজায়গা দখল ও বিক্রিতে জড়িয়ে পড়ে তার বাহিনী। 

পরে জেলফেরত ও হত্যা, মানবপাচারসহ মারামারি মামলার আসামী হিসেবে তথ্য গোপন করে আইএমও এনজিও এর গাড়ি চালক বনে যায়। এনজিওতে চাকুরীর সুবাদে পুলিশ তাকে আইনের আওতায় আনছে না দাবি এলাকাবাসীর। কয়েকটি মামলার আসামীকে ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেয়ায় আন্তর্জাতিক এনজিও আইওএম'র দায়িত্বহীনতা নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা চলছে এলাকাজুড়ে। মানবপাচার ও মারামারিসহ একাধিক মামলা ও অভিযোগ মাথায় নিয়ে এলাকায় ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে মো. মিজান। নিজের দখলে থাকা ২৫ জনের একটি কিশোর গ্যাংয়ের সিন্ডিকেট নিয়ে পুরো এলাকায় অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে মিজান। ভুয়া তথ্য দিয়ে এনজিওর গাড়ি চালকের দায়িত্ব নিলেও থেমে থাকেনি তার অপকর্ম। একের পর এক অপরাধ কর্মকান্ড চালাচ্ছে নিজ এলাকা সমিতিপাড়ায়। সর্বশেষ এক ব্যবসায়ীকে রাতে মারধর করে নগদ টাকা লুট করার মতো ঘটনার জন্ম দেন কিশোর গ্যাং লিডার মিজান। ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী। 

এজাহার সূত্রে জানা গেছে- মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দা শুটকি ও ফিশিং বোট ব্যবসায়ী ফজল করিম শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তার কর্মচারী আব্দু শুক্কুরের বাড়িতে যান তার কিছু বেতনের টাকা পরিশোধ করার জন্য। তাকে টাকা পরিশোধ করে আসার পথে মিজানসহ তার গ্যাংয়ের সদস্যরা ফজল করিমের পথ গতিরোধ করে অর্তকিতভাবে হামলা চালায় গ্যাং লিডার মিজান। 

এসময় তার সাথে ছিলেন, সমিতি পাড়া এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে মো. মান্নান, ইউসুফ জালালের ছেলে মো. জয়নাল ও নুর আহমদ মাঝির ছেলে মো. হান্নানসহ একদল অপরাধী চক্র। এসময় ব্যবসায়ী ফজলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এমনকি চাকুর ভয় দেখিয়ে পকেটে থাকা নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে গ্যাং লিডার মিজানসহ তার সহযোগিরা। 

ঘটনার পরপরেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ফজল করিম। মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়া এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে ফজল করিম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- সমিতি পাড়া এলাকায় আলোচিত কিশোর গ্যাং লিডার হিসেবে চিহ্নিত মো. মিজান। দীর্ঘদিন ধরে ১নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে তিনি। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মানব পাচার ও মারামারির মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ে করেন ভুক্তভোগিরা।সমিতি পাড়া এলাকার এক সমাজ নেতা বলেন- মিজান ছেলেটি খুবই বেপরোয়া। এমন কোন অপরাধ নেই সে করে না। এক সময় মানবপাচার করেছিল। যার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়। তবে এসব মামলা ও অভিযোগ আড়াল করে কয়েক বছর ধরে একটি এনজিওতে ড্রাইবারের চাকরি নেন। এনজিওতে চাকরি করলেও তার অপরাধ প্রবণতা কমেনি। এলাকায় গ্যাং তৈরি করেছে। ২৫ জনের একটি গ্যাং তার নেতৃত্বে রয়েছে বলেও খবর প্রচার করে মিজান। 

সমিতি পাড়া এলাকায় প্রকাশ্যে তার বিচরণ। তার ভয়ে সহজে কেউ কথাও বলে না। তবে প্রতিমাসে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ থানায় দায়ের করেন ভুক্তভোগিরা। তবে অনেকেই ভয়ে সাহস করে না। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাই করে বলে জানা গেছে। এব্যাপারেও থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image