• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ডেঙ্গুর হটস্পট


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০৭ পিএম
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ডেঙ্গুর হটস্পট
এডিস মশা

জাফর আলম, কক্সবাজার : কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ডেঙ্গুর হটস্পট হয়ে উঠেছে । ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬১৯ জন রোহিঙ্গা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে।কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ পংকজ পালের দেওয়া এক তথ্য বিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় মোট ২ হাজার ৮৪১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে।রবিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১৭৩ জন। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে যে ৬৬৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার মধ্যে রোহিঙ্গা ৬১৯ জন। বাকি ৪৯ জন স্থানীয় বাঙালি।তথ্য বিবরণীতে আরও দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে সোমবার পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৬৭৬ জন। যেখানে রোহিঙ্গা ২ হাজার ৫২১ জন ও ১৫৫ জন স্থানীয় বাঙালি।

রবিবার পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ছিল ২ হাজার ২৩ জন। যেখানে রোহিঙ্গা ছিল ১ হাজার ৯০৫ জন এবং ১১৮ জন ছিল স্থানীয় বাঙালি। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয় ১৬৫ জন। এর মধ্যে ১০১ জন স্থানীয় বাঙালি আর ৬৪ জন রোহিঙ্গা। রবিবার মোট আক্রান্ত ছিল ১৫০ জন। এর মধ্যে ৮৯ জন বাঙালি এবং ৬১ জন রোহিঙ্গা। সদর হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ জন বাঙালি ও ৩ জন রোহিঙ্গা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।পরিসংখ্যানবিদ পংকজ পাল জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাঁচটি এলাকা ডেঙ্গুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩ নং ক্যাম্পে ৬২০ জন, ১৭ নং ক্যাম্পে ১৭১ জন, ৪ নং ক্যাম্পে ১৬৭ জন, ১ নং ডব্লিউ ক্যাম্পে ১১৫ জন এবং ২৪ নং ক্যাম্পে ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া কক্সবাজার পৌরসভায় ৩২ জন, চকরিয়ায় ২৭ জন, উখিয়ায় ২৬ জন, টেকনাফে ২৩ জন, সদরে ২০ জন এবং মহেশখালীতে ১৩ জন রোগী পাওয়া গেছে।তিনি আরও জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ভর্তি আছে মোট ২৫ জন। এর বাইরে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৫ জন ভর্তি রয়েছে। সর্বশেষ ২৩ জুন একজনের মৃত্যুসহ গত ৬ মাসে মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সকলেই রোহিঙ্গা। আক্রান্ত বিবেচনায় ৬৫ শতাংশ পুরুষ ও ৩৫ শতাংশ নারী। এতে ০-৫ বছরের মধ্যে ৭ শতাংশ, ৬-১৮ বছরের মধ্যে ১৭ শতাংশ, ১৯-৪০ বছরের মধ্যে ৬৩ শতাংশ, ৪১-৬০ বছরের মধ্যে ১২ শতাংশ ও ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১ শতাংশ মানুষ পাওয়া গেছে।কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের কমিশনারের কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কো-অর্ডিনেটর ডা. আবু তোহা বলেন, ’রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অধিকসংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হলেও এটা উদ্বেগজনক বলা যাবে না।

সচেতনতার কারণে আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এখানে চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরছেন ৯৯ শতাংশ। মাত্র ৪ জন রোগী নানা কারণে মারা গেছে। তিনি বলেন, ’ক্যাম্পে এখন অধিক সচেতনতা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ক্যাম্পে অবস্থিত বিভিন্ন ড্রেনেজ সিস্টেমে ব্লিচিং পাউডার নিয়মিত ছিটানো এবং এ বিষয়ে তদারকির জন্য ওয়াস সেক্টরের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। ক্যাম্পে হেলথ সেক্টরের সঙ্গে নিয়মিত সভা হচ্ছে। প্রতিটি ক্যাম্পের ব্লকের নেতা (মাঝি) এবং উপনেতাদের (সাব-মাঝি) সঙ্গে সভা করে জমানো পানি অপসারণ করা হচ্ছে। ডেঙ্গু নির্ণয়ের জন্য পর্যাপ্ত কিট সরবরাহসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

ফলে ডেঙ্গু কমানো সম্ভব বলে আশা করা যাচ্ছে।’কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন, ’সম্ভাব্য ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কক্সবাজারের সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে চিকিৎসার জন্য ১০ জন চিকিৎসক নিয়ে টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে সদর হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো। ২০২২ সালে কক্সবাজারে মোট ১৯ হাজার ২৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩৬ জন রোহিঙ্গা ও ৩ হাজার ৫৮৫ জন ছিল স্থানীয়। ওই বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৩৯ জন। যার মধ্যে রোহিঙ্গা ২৬ জন ও বাঙালি ১৩ জন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image