নিউজ ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে চলছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। শনিবার সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণের শুরু থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে।
গোটা রাজ্যে এক দফাতেই এই পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। রাজ্যের ২২ জেলার মধ্যে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় দ্বিস্তরীয় ভোট (গ্রাম সভা, পঞ্চায়েত সমিতি) এবং বাকি জেলাগুলোতে ত্রিস্তরীয় (গ্রাম সভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ) ভোট হচ্ছে।
ইতোমধ্যে রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় গড়ে ১০ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোট গ্রহণ চলছে বাকি আসনে। এই নির্বাচনে গোটা রাজ্যে ভোট নেওয়া হচ্ছে মোট ৭৩ হাজার ৮৮৭ আসনে। এর মধ্যে রয়েছে ৩৩১৭টি গ্রাম সভার ৬৩ হাজার ২২৯ আসন; ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ৭৩০ আসন; এবং ২২ জেলা পরিষদের ৯২৮ আসন।
প্রায় ২ লাখের বেশি প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে এই ভোটে। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র আছে ৬১ হাজার ৬৩৬টি। এর মধ্যে ৪ হাজার ৮৩৪টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। শতাংশের হিসেবে যা ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। মোট ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৬৭ লাখ ২১ হাজার ২৩৪।
ভোট শুরুর আগেই জেলায় জেলায় ব্যাপক সহিংসতায় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে কোচবিহারে ২ জন, মুর্শিদাবাদে ২ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১ জন ও মালদায় ১ জন নিহত হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩৫ জন। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব থেকে গত ৩০ দিনে ২৫ জনের প্রাণহানি হলো।
ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে একের পর সহিংসতার ঘটনায় ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভোট সম্পর্কিত বিষয়ে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভিযোগ জানতে ও সেগুলোর বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে রাজভবনে (গভর্নর হাউজ) পিসরুম চালু করেছেন রাজ্যপাল।
তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েনের কথা থাকলেও একাধিক বুথে তাদের দেখা যায়নি। তার পরিবর্তে দেখা গেছে রাজ্য পুলিশ এবং সিভিক পুলিশের সদস্যদের।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর গ্রামসভা নির্বাচনে এই প্রথম কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। বিজেপি ছাড়াও লড়তে হচ্ছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু আসনে কড়া চ্যালেঞ্জ দিতে পারে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) প্রার্থীরা।
প্রসঙ্গত, আগামী বছর ভারতে লোকসভা নির্বাচন হবে। তার আগে এই নির্বাচন প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: