• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কক্সবাজারে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৮ আগষ্ট, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৫৫ পিএম
কক্সবাজারে কয়েক লাখ
মানুষ পানিবন্দি

জাফর আলম, কক্সবাজার : ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় জেলার ৭ উপজেলা এখন প্লাবিত। এসব উপজেলার অন্তত ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানির কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কুতুবদিয়ায় ৭০০ পরিবার, পেকুয়াতে ১০ হাজার পরিবার, মহেশখালীতে ৫০০ পরিবার, চকরিয়ায় ৫০ হাজার পরিবার, কক্সবাজার সদরে ১ হাজার পরিবার, ঈদগাঁও উপজেলায় ১৫০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।এছাড়া রামু উপজেলার ৪ ইউনিয়ন নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

মিঠাছড়ি, খুনিয়াপালং, রশিদনগর ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের বাঁকখালী নদী সংলগ্ন গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও, জালালাবাদ, পোকখালী, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন, কক্সবাজার সদরের পিএমখালী, খুরুশকুল, পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড, কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়ন, মহেশখালীর ৩ ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ৭ উপজেলাসহ বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।

আবহাওয়া অফিসের কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র দাশ জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১৭ মিলিমিটার। আগামী আরও ৩ দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এতে পাহাড় ধসের শঙ্কাও রয়েছে। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী জানান, পাবর্ত্য জেলা ও চকরিয়ার পাহাড়ি ঢল নেমে আসার মাধ্যম মাতামুহুরি নদী। পাহাড়ি ঢল, বৃষ্টি এবং জোয়ারের ঢেউতে বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। চকরিয়ার একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে পৌরসভাসহ ১২ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে কাকড়া, লক্ষ্যরচর, বুমুবিল ছড়ি, সুরেজপুর-মানিকপুর, কৈয়ারবিল, কোনাখালী ইউনিয়ন। অনেক এলাকায় পানি বেশি হাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সরানো হয়েছে। 

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান জানান, টানা চারদিনের বৃষ্টিতে ১২ ইউনিয়নের ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদের শুকনা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

পানি বেশি হওয়ায় তলিয়ে গেছে মৌসুমী সবজিসহ আউশ ধানের খেত। পানিতে ভেসে গেছে সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে আন্তঃসড়ক যোগাযোগ। যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে সেখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুতুবদিয়ায় ৭০০ পরিবার, পেকুয়াতে ১০ হাজার পরিবার, মহেশখালীতে ৫০০ পরিবার, চকরিয়ায় ৫০ হাজার পরিবার, কক্সবাজার সদরে ১ হাজার পরিবার, ঈদগাঁও উপজেলায় ১৫০ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রতিটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছে। তারা বোট নিয়ে পানিবন্দি মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছে এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছে। এদিকে পুরো জেলায়, উখিয়া ও চকরিয়ায় পাহাড় ধসে মা-মেয়েসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও চারজন। রামুতে পানি ডুবে মারা যায় আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়। সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মা-মেয়ে, চকরিয়ার বড়ইতলী এলাকায় ভাই-বোন ও রামুর রাজারকুলে দুই বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image