আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কারখানা, অট্টালিকা আর সড়ক নির্মাণে ব্যাপক বিনিয়োগ করে অর্থনীতিতে এগিয়ে চীন। এই কর্মপরিকল্পনায় অসাধারণ সাফল্যের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশটি।
বিশ্বব্যাপী রপ্তানিতে নিজেদের জায়গা করে নেওয়ার পাশাপাশি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মর্যাদাও অর্জন করেছে চীন। দেশটির সেই পুরোনো মডেল এখন ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করলেও সেখান থেকে আসছে না আয়। প্রবৃদ্ধিও মন্থর। কমে গেছে বিদেশি বিনিয়োগ। ফলে চীনের অর্থনীতি এখন গভীর সংকটে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
এখন ঋণে জর্জরিত চীন। নির্মাণসামগ্রীও ফুরানোর পথে। চীনের কিছু অংশে সেতু আর বিমানবন্দর রয়েছে অব্যবহৃত। লাখ লাখ অ্যাপার্টমেন্ট খালি পড়ে আছে। অথচ যুগ যুগ ধরে এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে দেশটি।
দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের ইউনানসহ দূরের প্রদেশগুলোতেও একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। এসব এলাকায় করোনার সময় শূন্য কভিড নীতির কারণে দীর্ঘ লকডাউন ছিল। অন্য এলাকাগুলোরও একই অবস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক এবং অর্থনৈতিক সংকট বিশেষজ্ঞ অ্যাডাম টুজ বলেন, আমরা দেশটিতে অর্থনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় গতিপথের মধ্যে একটি পরিবর্তন দেখছি। চীনের ভবিষ্যতের বিষয়েও কোনো সুসংবাদ নেই। কারণ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগামী বছরগুলোতে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪% এর নিচে রেখেছে। এটি দেশটির গত ৪০ বছরের অধিকাংশ সময়ের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
লন্ডন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের তথ্যমতে, চীনের প্রবৃদ্ধির প্রবণতা ২০১৯ সালে ৫% থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসে। ২০৩০ সাল নাগাদ এটি প্রায় ২ শতাংশে নেমে আসবে।
মধ্যম আয় থেকে উন্নত দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়া এবং বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাও অপূর্ণই থেকে যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির উৎপাদন কমার পাশাপাশি রপ্তানিও হ্রাস পেয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে যুবকদের বেকারত্ব। এমন দুর্বল অর্থনীতি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী চীনা নেতা জিনপিংয়ের জনপ্রিয়তাও কমিয়ে দিতে পারে।
দেশটিতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে বিরোধিতার কোনো ইঙ্গিত এখন পর্যন্ত নেই। ক্ষমতাসীন দলে জিনপিংয়ের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: