রিপন সরকার, খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির রামগড়ে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো) সার উৎপাদনে ব্যাপক সাড়া পরেছে আর এর সলতা অর্জন করেছেন কালাডেবা এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা, কাজী মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
জানা গেছে ২০১৮ সালে কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা স্বল্প টেনিং নিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট ( কেঁচো) সার উৎপাদন শুরু করেন। কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রম আর নিবির পরিচর্চায় এ সকল কৃষি উদ্যোক্তার মধ্যে মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদই হলেন এমাত্র সফল উদ্যোক্তা।
রামগড় পৌর সভার ৭নং ওয়ার্ড কালাডেবা এলাকার বাসিন্দা কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এর বড় ছেলে কাজী মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, রামগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৮ সালে মাত্র ২টি রিং স্লাব দিয়ে শুরু করেন এ সারের উৎপাদন। ধীরে ধীরে সার উৎপাদনের পরিধি বাড়িয়েছেন। বাড়ির উঠোনে বিশাল টিনের সেড ও আরেক পাশে ছাপড়ার নিচে ২৭০টি (চৌবাচ্চা)রিং বসানো হয়। মাত্র ২টি রিং দিয়ে শুরু করা নিজ প্রচেষ্টার প্রকল্প বর্তমানে ২৭০টি রিং এ দাড়িয়েছে।
প্রতিটি রিং এ গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্টাংশ ও কলাগাছের টুকরো মিশ্রণ করে হাউজে কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। তারপর চটের বস্তা দিয়ে হাউজ ঢেকে রাখা হয়। এভাবে এক মাস ঢেকে রাখার পর তৈরি হয় ভার্মি কম্পোস্ট সার।হাউজ থেকে মাসে আনুমানিক ৩ টন সার উৎপাদন হয়ে থাকে।কাজী আবুল কালাম জানান আমি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করি না,তবে যে হারে চাহিদা বেড়েছে এতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করতে চাচ্ছি। যারা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছে, তারা এ সার প্রতি কেজি খুচরা ১৫ টাকা ও পাইকারি ১২টা করে বিক্রি করছেন।
এদিকে কাজী আবুল কালাম আজাদের উৎপাদিত কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তার এ উদ্যোগ দেখে জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে চাষিরা নিজ বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন করে তা দিয়ে জমিতে চাষাবাদ করছেন।ভার্মি কম্পোস্ট সার জমির উর্বরতা বাড়ায়, ফলনও বেশি হয়। রাসায়নিক সারের দাম ও ক্ষতিকারক বেশি। এজন্য এখন ভার্মি কম্পোস্ট সার জমিতে ব্যবহার করছে স্থানীয় কৃষকরা। অল্প খরচে অধিক লাভবান হচ্ছেন বলেও জানান কয়কজন কৃষক।
কৃষি উদ্যোক্তা কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি বাণিজ্যিক ভাবে সার বিক্রি শুরু করিনি,পরীক্ষামূলক এই সার উৎপাদন করছি, যে সার উৎপাদন হচ্ছে তা আমার নিজের জমিতে ব্যবহার করছি।কৃষকদের কাছে বর্তমানে কেঁচো সার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেঁচো সার উৎপাদনে আমি সফল।বর্তমানে সারের চাহিদা থাকায় উৎপাদনও বাড়াচ্ছি। এক সময় ভার্মি কম্পোস্ট সার বাণিজ্যিক ভাবে পাহাড়ে ব্যাপক সারা পড়বে।তবে এজন্য সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি দাবি করেন।
রামগড় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরী বলেন, কেঁচো দিয়ে সার উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।রামগড়ে কয়কজন উদ্যোক্তার মাঝে আবুল কালাম আজাদ একজন সফল উদ্যোক্তা।অনেক কৃষক নিজের জমির জন্য কেঁচো সার উৎপাদন করছে। কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: