• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লায় হাটবাজার জুড়ে ধুমকরদের দিন রাত ব্যস্ততায় ঘুম নেই 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০২:২৯ পিএম
কুমিল্লায় হাটবাজার জুড়ে
ধুমকরদের দিন রাত ব্যস্ততা

মশিউর রহমান সেলিম, কুমিল্লা : কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চল লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জের হাট জুড়ে শীতের শুরুতেই ধুমকরদের কাজের ব্যস্ততায় চোখে ঘুম নেই। ইতিমধ্যে রাতের বেলায়  কুয়াশা ও হিমেল বাতাস জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমণী সংকেত। প্রবাদ আছে মধুমাস অগ্রহায়ন আর পৌষ ও মাঘ শীতকাল হলেও কার্তিক মাসের শেষ দিকে এবং অগ্রহায়ন মাসের শুরুতেই দিনের শেষ ভাগে এসে বেশ শীত অনুভব হয়। 

শেষ রাতে চারদিকে কুয়াশায় ঢাকা থাকে সমগ্র এলাকা । বর্তমান সময়ে হালকা শীত অনুভব হলেও এসময়টা বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য বিপদজনক। তবে শৈত্য প্রবাহের প্রভাবে শীত অনেকটা পড়তে শুরু করেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের শীতের সরঞ্জাম তৈরির দোকানগুলোতে মহাধুমধাম ও ব্যস্ততায় রয়েছে স্থানীয় বাজারের ধুমকররা। তুলা, রুই, জুট ও নারিকেলের চাপল সংগ্রহ এবং ওইসব পন্য পরিস্কার-পেটানোর কাজগুলোতে টুংটাং শব্দে প্রতিনিয়ত উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এদিকে শীতের আগমনী বার্তা শুরুর সাথে সাথে বেড়েছে ধুমকরদের দিন-রাত ব্যস্ততা। 

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলাগুলোর হাট-বাজারে শীতের অন্যতম বস্ত্র লেপ-তোষক তৈরীতে ধুমকরদের দোকানে ক্রেতাদের ভীড় দেখা যায়। বিশেষ করে মনোহরগঞ্জ বাজার, দৌলতগঞ্জ রেলগেইট, উত্তর লাকসাম, লাকসাম রেলওয়ে জংশন বাজারসহ উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় ধুমকরদের তৈরী শীতের লেপ, তোষক, জাজিম, বালিশসহ অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করতে দোকান সাজিয়েছে ওই পেশার ব্যবসায়ীরা। তবে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে এ ব্যবসা কিছুটা ধ্বস নেমেছে।  

লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ধুমকররা জানান, শীতের শূরু এসময়টা বছরের অন্য সময়ের চেয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় আমাদের। লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার এলাকার পাইকারী শীত পোষাকের দোকান থেকে উপজেলাগুলোর প্রায় শতাধিক খুচরা দোকানদার ওইসব মালামাল নিয়ে থাকে। একটি লেপ-তোষক তৈরির দোকানের কারখানায় দিনরাত কাজ করে বেশ কয়জন কারিগর তারা সকলেই আত্মীয়স্বজন। তাদের পৈত্রিক বাড়ি একই এলাকার উত্তর লাকসামে। তারা সকলেই এলাকায়  লেপ তোষক তৈরি করছেন ৮-৯ বছর যাবত। চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন তারা। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে ৪ থেকে ৫টি লেপ ও তোষক তৈরি করতে পারেন। আর প্রতিটি তৈরির জন্য মালিক থেকে ৪০০-৬০০ টাকা পান। তুলা ও সেলাইয়ের নকশার কারুকাজ নমুনার ওপর ভিত্তি করে লেপ ও তোষকের দর দাম নির্ধারন হয়ে থাকে। বর্তমানে এ পেশার কারিগররা এ কাজ না করে অন্য পেশায় ঝুঁকছে। 

স্থানীয় ধুমকর দিনমজুর শ্রমিকরা জানান, বেশির ভাগ ক্রেতা রেডিমেট লেপ কেনার চেয়ে অর্ডার দিতেই বেশি উৎসাহ বোধ করে। বর্তমানে দুই ধরনের তুলার কাজে বেশি চাহিদা। সাদা সুপার তুলা প্রতি কেজি ৪শ/৫শত টাকা। 

আর কালো রংয়ের বাজার প্রতি কেজি তুলা ৫০০/৫৫০ টাকা, হুইল ৪০০/৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা। একজন লোক ব্যবহার করতে পারে এমন সাইজের একটি লেপ তৈরি করতে ৫ থেকে সাড়ে ৭কেজি তুলা প্রয়োজন। আর দুইজন বা ততোধিক লোকের বেশি ব্যবহার্য লেপের জন্য সাড়ে ৬ থেকে সাড়ে ১০ কেজি তুলা প্রয়োজন হয়। সারাদিনে তোষকের চেয়ে লেপ তৈরির অর্ডার বেশি আসে। 

এদিকে নিম্ন আয়ের সাধারন মানুষের জন্য কমমূল্যের লেপ তৈরীতে চাহিদা একটু বেশি। আর এজন্যই লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটে গড়ে উঠা লেপ তোষক তৈরির দোকানগুলোতে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মত।

এ ব্যাপারে ওই বাজারের শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী সাজু বের্ডিং এর মালিক মোঃ শামছুল হক সাজু জানায়, এ এলাকার মানুষ এখন আর আগের মত লেপ-তোষক বানাতে চায় না। কারন বাজারে অনেক রেডিমেট মালামাল সহ বিভিন্ন দেশের আমদানি করা ওই সব পন্য পাওয়া যায়। বিশেষ করে ওইসব পন্য বানাতে যে সকল কাঁচা মাল প্রয়োজন সে গুলোর পাইকারী -খুচরা বাজারে আগের তুলনায় বর্তমানে দাম অনেক বেশী। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মালামাল গুলোর বিক্রিতে অনেক দাম হাঁকাতে হয়। বিক্রি একেবারেই কম। পৈত্রিক পেশা হিসাবে কোন রকমে খেয়ে- পড়ে বেঁচে আছি।  

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image