বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুর বিরামপুরে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত অঞ্চল। পাখির কলরবে মুখর এলাকা, কিচিরমিচির ডাকে মেতে উঠেছে এখানকার চিত্র। এরকম চিত্রের স্হানে পর্যটকদের মাঝে বাড়তি আনন্দ দেয়। এমন বিরামপুর পৌরসভার কল্যাণপুর মহল্লা সংলগ্ন একটি কচুরিপানা ও পদ্যপাতায় ভর্তি পুরাতন পুকুর। অতিথি পাখির আগমনে এলাকার রূপ-বৈচিত্র্যে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সেই পাখিদের সাথে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এলাকার ছেলেমেয়েদের উৎসুক ভিড় জমাচ্ছে। বিরামপুর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের বিশাল পরিত্যক্ত পুকুর এখন পরিযায়ী পাখির দখলে। দেশের বাইরে থেকে আসা পাখি গুলো মনমুগ্ধকর কিচিরমিচির শব্দে এলাকার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে।
জানা যায়,পাখি গুলো শীতের শুরু থেকে তারা এখানে আসতে শুরু করে। এলাকার উৎসুক ছেলেমেয়েরা মন ভরে উপভোগ করছেন পাখিদের বিচরণ, কলকাকলি আর কিচিরমিচির ডাক। তুলনামূলক কম শীতের বাংলাদেশে খাদ্য ও নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় চলে আসে অতিথি পাখিরা।
এ সময় বাংলাদেশের হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল ভরে ওঠে পাখিদের আনাগোনা ও কলকাকলীতে। যেসব স্থানে পাখিদের খাদ্যের প্রাচুর্য বেশি এবং বিশালাকার জলাশয় রয়েছে মূলত সেসব এলাকাতেই এরা ছুটে যায়। জানা গেছে,অন্যান্য বছরের মতো এবারো অতিথি পাখিরা উড়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বিরামপুর উপজেলার কল্যানপুরে। এই অতিথি পাখিরা
সাত সাগর তের নদী পেরিয়ে এসেছে পরিযায়ী পাখিরা। তবে শিকারিদের শ্যেনদৃষ্টি আর কৃত্রিম মাছের প্রকল্পে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে পাখিদের বিচরণ কমতে শুরু করেছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কোনো প্রকার সরকারি ঘোষণা ছাড়াই একসময় পাখির অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছিল বিরামপুর উপজেলা এলাকার সুবিশাল বিল আর জলাশয়ে।
অতিথি পাখিরা ক্যামেরায় ক্লিক পড়তেই ঝাঁক বেঁধে কিচিরমিচির শব্দে উড়তে শুরু করে আকাশে। বিলের চারদিকে দেখা মেলে নানা প্রজাতির ছোট-বড় অসংখ্য পাখির। ঘুরতে আসা পাখি প্রেমী সাব্বির হোসেন বলেন,বরাবরের মতো আমি পাখি প্রিয় মানুষ। একসময় বাসায় পাখি লালন-পালন করতাম। পরে পাখিদের ছেড়ে দিয়েছি। শীতের সকালে পাখি দেখবো বলে এখানে এসেছি। আর কখনো এমন ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির দেখা মেলেনি। এবার সত্যিই তাদের দল বেঁধে আকাশে উড়ে বেড়ানো দেখে ভালো লাগছে।’
ডাঙ্গাপাড়া হাকিমপুর উপজেলার বাসিন্দা থেকে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন,শীতকালে এ উপজেলায় এর আগে কখনো আসা হয়নি। অতিথি পাখিদের সাথে শীতের সত্যিই সুশোভিত লাগছে। প্রতি বছর পাখিদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে সারা উপজেলা। পাখি গবেষকের সাথে যোগাযোগ করে একটি প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে এটিও হতে পারে পাখিদের বড় অভয়াশ্রম।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন,বর্তমানে গাংচিল আর লেন্জা প্রকৃতির পাখি ছাড়া আর কোনো প্রজাতির পাখি এখানে চোখে পড়ে না। তারা এর জন্য শিকারিদের শ্যেনদৃষ্টি আর কৃত্রিম মাছের প্রকল্পে ক্ষতিকারক কীটনাশক (বিষ) ব্যবহারকে দায়ী করেন। এলাকার বাসিন্দারা জানান,একসময় শীতের শুরুতেই দলে দলে অতিথি পাখিদের আগমন ঘটত মুহুরী এই এলাকায়। বিকেল বেলায় পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে এখানকার পাড়াগুলো মুখরিত হয়ে উঠত। ইতোমধ্যে পাখি ধরা কিংবা শিকারিদের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যে কেউ আমাদের এমন অপরাধের তথ্য দিলে আমরা তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: