মনিরুজ্জামান মনির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আ. কুদ্দুসকে কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে। এক সহকারী প্রকৌশলীকে চার মাস ধরে যোগদান না করানোর অভিযোগে।
ওই শোকজে তাঁর বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—মর্মে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পবিত্রভূষণ পাল উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় কর্মরত ছিলেন। এরই মধ্যে তিনি সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জেলার নবীনগর পৌরসভায় যোগ দেন। পরে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলীর (পানি ও পয়োনিষ্কাশন) শূন্যপদে বদলি করা হয়।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির তাঁকে বদলির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অনাপত্তি দেন।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের আদেশ পেয়ে সহকারী প্রকৌশলী পবিত্রভূষণ পাল ১৭ এপ্রিল নিয়ম অনুযায়ী মেয়রের কাছে যোগদানপত্র দাখিল করেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আ. কুদ্দুসের কাছে ওই যোগদান পত্র পাঠান।
এ চিঠি পাওয়ার পর থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সিইও। বারবারই তিনি মেয়রকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন, ‘যিনি অনাপত্তিপত্র দিয়েছেন ও যাঁরা যোগদানের আদেশ দিয়েছেন, তাঁরাই তাঁকে এখানে যোগদান করাবেন।’
এ অবস্থায় যোগদানের জটিলতা নিরসনে গত ১ আগস্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন পবিত্রভূষণ।
এরই আলোকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপসচিব আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বৈধ আদেশ প্রতিপালন না করার কারণে কেন তাঁর বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হবে না—মর্মে সিইওকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের বৈধ আদেশ প্রতিপালন না করে বদলীকৃত পৌরসভার কর্মচারীর যোগদানপত্র গ্রহণ না করা, প্রশাসনিক শিষ্টাচার পরিপন্থী এবং অসদাচরণের শামিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী পবিত্রভূষণ পাল মোবাইল ফোনে বলেন, ‘যোগদানের জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি।
শেষ পর্যন্ত আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হয়েছি। ২৭ আগষ্ট পৌর মেয়র আমার যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়েছে—মর্মে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি ইস্যু করেছেন। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ৩০ আগস্ট এক আদেশে আমাকে লাকসাম পৌরসভায় বদলি করেছে বলে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে জানতে পেরেছি। আদেশ অনুযায়ী সেখানে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সিইও মো. আ. কুদ্দুসের কাছে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গেও উত্তেজিত হয়ে ওই কর্মকর্তা। বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কমেন্টস করব না।’ এরপর ফোন রাখেন তিনি। পৌর মেয়র নায়ার কবির বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘পানি ও পয়োনিষ্কাশনের এই পদে আরো একজন কর্মরত থাকায় নবীনগর থেকে বদলি হয়ে আসা পবিত্র পালকে তাৎক্ষণিকভাবে যোগদান করানো সম্ভব হয়নি।’
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: